কলকাতা: কাজের বাজার খারাপ। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ২০০টি ছোট কলেজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৮০,০০০ আসন কম থাকবে। এই সঙ্গে, বিদেশে ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারদের ন্যাশনাল বোর্ড অফ অ্যাক্রেডেশন বা এনবিএ–এর অনুমোদিত ডিগ্রী না থাকে তাঁরা অনেকে সঙ্কটে পড়েছেন। চাকরি পাকা করতে সব প্রতিষ্ঠানকে এনবিএ–এর আওতায় আনা হচ্ছে।
‘অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন’ বা এআইসিটিই একথা জানিয়ে বলেছে, সারা দেশের প্রায় ২০০টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ তাদের কাছে কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিল। পুরো আসন ভর্তি না হওয়া, পরিকাঠামোর অভাব এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভবপর না হওয়ার জন্যই এই আবেদন করেছিল কলেজগুলি।
তবে, আগের ব্যাচ স্নাতক না হওয়া পর্যন্ত সেগুলি চালু থাকবে। এবছর কোনও নতুন ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হবে না। ছাত্রছাত্রীদের চিন্তামুক্ত করতে এআইসিটিই জানিয়েছে, আইআইটি এবং এনআইটি–তে ছাত্র ভর্তির সংখ্যা বাড়ানো হবে।
এআইইসিটিই জানিয়েছে, ২০২২ সালের মধ্যে দেশের সব কটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ বিষয় ন্যাশনাল বোর্ড অফ অ্যাক্রেডেশন বা এনবিএ–এর অনুমোদন লাগবে। বর্তমানে মাত্র ১০ শতাংশ বিষয়ে অ্যাক্রেডেশন লাগে।
সম্প্রতি কুয়েতে নিয়ম হয়েছে, বিদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের বসবাস এবং কাজ করতে হলে সে দেশের ‘সোসাইটি অব ইঞ্জিনিয়ার্স’-এর থেকে ছাড়পত্র লাগবে। ওই সংস্থা আবার জানিয়েছে, ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারদের ক্ষেত্রে এ দেশের এনবিএ শংসাপত্র পাওয়া কলেজের ডিগ্রি থাকতে হবে। না হলে কুয়েতে বসবাস এবং কাজের ছাড়পত্র তারা দেবে না। এতে সঙ্কটে পড়েছে ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারেরা।
কুয়েতের বেশির ভাগ ইঞ্জিনিয়ারই ভারতীয়। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, আন্না বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন আইআইটি-র এখনও এনবিএ শংসাপত্র নেই। এআইসিটিই ১৯৯৪ সালে এনবিএ তৈরি করে। দেশের প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কোর্সের মান যাচাইয়ের জন্যই এটি তৈরি করা হয়। কিন্তু এই সংস্থার অনুমোদনকে প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানগুলি গুরুত্ব দেয় না। শিক্ষা জগতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বলছেন, এটি এআইসিটিই-র অঙ্গ। তাই আলাদা গুরুত্ব পায় না। আবার এই অনুমোদন নিতে গেলে প্রচুর টাকাও দিতে হয়।
যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলি এআইসিটিই অনুমোদিত। মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের র্যাঙ্কিংয়ে (এনআইআরএফ) দেশের প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এখন দ্বিতীয় স্থানে যাদবপুর। নাকের মূল্যায়নে যাদবপুর পেয়েছে ৩.৬৮। দেশের ২০টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র ‘ইনস্টিটিউটস অব এমিনেন্স’ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে। সেই প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক তালিকায় রয়েছে যাদবপুর। ‘‘সেই যাদবপুরের পড়ুয়াদের যদি বিদেশে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের,’’ মন্তব্য চিরঞ্জীববাবুর। তবে তিনি এ-ও বলেন, ‘‘২০১৯ সালে এনবিএ-র মূল্যায়নে যাদবপুর অংশ নেবে। তার প্রস্তুতি আমরা শুরু করে দিয়েছি।’’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন