সৌরশক্তি থেকে পশ্চিমবঙ্গের স্কুলে ১০ ও কলেজে ২০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে - Aaj Bikel
demo-image
should-we-harvest-a-natural-resource-wind-power-solar-power-1687x1125-1000x500

সৌরশক্তি থেকে পশ্চিমবঙ্গের স্কুলে ১০ ও কলেজে ২০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে

Share This

কলকাতা : রাজ্যের প্রতিটি সরকারী ভবনে অপ্রচলিত শক্তির সাহায্যে বিদ্যুৎ তৈরির নির্দেশিকা দেওয়া হচ্ছে৷ এই সঙ্গে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের এক চতুর্থাংশ অপ্রচলিত বিদ্যুৎ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে৷ সোমবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি জানান, “সৌরশক্তি থেকে প্রতিটি স্কুলে ১০ কিলোওয়াট এবং প্রতিটি কলেজে ২০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে৷” ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরির অঙ্গীকার করা হল সোমবার কলকাতায় এক সম্মেলনে।

বিদ্যুৎমন্ত্রী এ দিন বলেন, “যে ভাবে দুষণ বাড়ছে, ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের, আমাদের সকলকে সতর্ক হতে হবে৷ গ্লোবাল ওয়ার্মিং আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে৷ জীবাশ্ম থেকে পাওয়া জ্বালানির বিপদ এড়াতে হলে সেই পথ তৈরী করতে হবে. জল-বায়ু-সৌরজগতের শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ পেতে হবে৷”

সৌরশক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন দেশের মধ্যে এ রাজ্যে প্রথম শুরু হয়েছিল। পরে গুজরাত, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য অপ্রচলিত শক্তি উৎপাদনে এগিয়ে গিয়েছে। ২০১৫-র ফেব্রুয়ারির বাজেট বক্তৃতায় রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানান, অপ্রচলিত শক্তির মাধ্যমে রাজ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপরে কর ছাড় দেবে। অপ্রচলিত শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদকদের ১০ বছর ধরে ১০০% ভ্যাট মকুব করা হলে দাম কমবে অপ্রচলিত শক্তির যন্ত্রের, মত ছিল তাঁর। উত্তর দিনাজপুরে ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরি হবে বলেও সে সময়ে জানান তিনি।
পরিবেশ দূষণ এড়াতে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়াতে বলছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁদের অনেকেই রাজ্যের ওই করছাড়ের ঘোষণাকে স্বাগত জানান। নতুন ঘোষণায় খুশি অপ্রচলিত শক্তি ও তার যন্ত্রাংশ নির্মাতারাও। তাঁদের অনেকে অবশ্য প্রশ্ন তোলেন, ওই ছাড় শুধু যন্ত্রাংশ বিক্রির উপরে দেওয়া হবে নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদকেরা কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রেও ওই ছাড় পাবেন, তা স্পষ্ট নয়। তাঁদের দাবি, কাঁচামাল কেনার সময় করছাড় না পেলে যন্ত্রের দাম বাস্তবে কতটা কমবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এর পর দু’বছরেও এই অবস্থা ততটা ইতিবাচক হয়নি। রাজ্যে অপ্রচলিত শক্তি সংস্থার প্রাক্তন অধিকর্তা অধিকর্তা শান্তিপদ গণচৌধুরী অবশ্য দাবি করেছেন, বহুতলে সৌরশক্তির প্যানেল বসানো বাধ্যতামূলক হচ্ছে। ফলে রাজ্যে অপ্রচলিত শক্তি যন্ত্রাংশের চাহিদা অনেকটা বাড়বে। এ দিন অবশ্য বিদ্যুৎমন্ত্রী তাঁর ভাষণে দাবি করেন, “২০১১-তে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি, রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ০.২% ছিল অপ্রচলিত শক্তির৷ এখন তা অনেকটা বেড়েছে৷ গত ৬ বছরে ৩২ মেগাওয়াট অপ্রচলিত শক্তির উৎপাদন বেড়েছে৷ আগামী দু’বছরে ৫০০ মেগাওয়াট করব এই উৎপাদন৷”

অপ্রচলিত শক্তি বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীদের বক্তব্য ছিল, গুজরাত বা মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে এই ধরনের শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেমন কঠোর নীতি রয়েছে, তেমনই ভর্তুকির মতো উৎসাহপ্রদান প্রকল্পও রয়েছে। রাজ্যের কর ছাড়ের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে সৌরশক্তি ব্যবসায়ী অনুপম বড়াল এক সময়ে বলেছিলেন, “শুধু কর ছাড়ে বা দাম কমিয়ে অপ্রচলিত শক্তিক্ষেত্রে উন্নতি অসম্ভব। বহুতলের মাথায় সৌরশক্তিকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।” এ দিন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, সৌরশক্তি থেকে প্রতিটি স্কুলে ১০ কিলোওয়াট এবং প্রতিটি কলেজে ২০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে৷”

এ প্রসঙ্গে, মন্ত্রী এ দিন বলেন, এক মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ করতে চার একর জমি দরকার৷ কেন্দ্রীয় সরকার ২০২২-এর মধ্যে সৌরশক্তি উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্র ধার্য করেছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্লিম এনার্জি’ প্রকল্পে আমরা সাহায্য চেয়েছিলাম কেন্দ্রের কাছে৷ ওরা দেয়নি৷

ব্রিটেনের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ টিম পেটারসন এ দিনের অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, পরিবেশ দূষণের সমস্যাটা নির্দিষ্ট কোনও অঞ্চলের নয়। গোটা বিশ্বেই এটা একটা দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে।এতে মার খাচ্ছে জনজীবন। মুস্কিল আসানের লক্ষ্যে 'ইনোভেটিভ টৈকনোলজি'-র গুরুত্বের কথা বলেন তিনি। আলোচনায় অংশ নেন বিশেষজ্ঞ-পরামর্শদাতা অম্বরিশ দাশগুপ্ত, কুনাল ভট্টাচার্য, ঋত্বিক মুখোপাধ্যায় প্রমুখ৷
Comment Using!!

কোন মন্তব্য নেই:

Pages