মুম্বই : পিএনবি দুর্নীতি কাণ্ডের জেরে 'লেটার অফ আন্ডারটেকিং' ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।
মঙ্গলবার এক নির্দেশিকা জারি করে ব্যাঙ্কগুলিকে লেটার অফ আন্ডারটেকিং (এলওইউ) এবং লেটার অফ কমফর্ট ইস্যু করতে নিষেধ করল আরবিআই। বিদেশ থেকে কোনও কিছু কেনার জন্য ঋণ নিতে এই লেটার অফ কমফর্ট ব্যবহার করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে, দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক প্রতারণা মামলার প্রধান অভিযুক্ত পলাতক নীরব মোদী ও তাঁর মামা মেহুল চোকসির ব্যবহৃত ইম্পোর্ট ফিনান্সিং রুট বা আমদানি ক্ষেত্রে আর্থিক জোগানের রাস্তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তবে, লেটার অফ ক্রেডিট বা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি আগের মতোই বহাল থাকছে। যদিও, তাতে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে। তবে, আরবিআই-এর নতুন নির্দেশিকার ফলে আমদানি-নির্ভর ব্যবসা মার খেতে পারে। কারণ, ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির পেতে অধিকাংশ ব্যবসায়ীই এলওইউ-কেই ব্যবহার করে থাকেন।
কোনও পণ্য বা পরিষেবা আমদানি বাবদ বৈদেশিক সংস্থার প্রাপ্য অর্থ মেটানোর জন্য লেটার অফ আন্ডারটেকিং ব্যবস্থা চালু ছিল ভারতে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কোনও ব্যাঙ্ক তার উপভোক্তাকে অন্য আরেকটি ভারতীয় ব্যাঙ্কের বৈদেশিক শাখা থেকে স্বল্প মেয়াদের ঋণে টাকা তোলার ছাড়পত্র দিত। এই টাকা সংশ্লিষ্ট উপভোক্তা তথা ব্যবসায়ী যে সংস্থা থেকে কোনও পণ্য বা পরিষেবা কিনছে তাদের দাম চোকাতে ব্যবহার করত।কিন্তু এদিনের ঘোষণার পর সেসবই এখন অতীত হয়ে গেল।
উল্লেখ্য, পিএনবি-কে ১২,৭০০ কোটি টাকার প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী এবং মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, জাল লেটার অফ আন্ডারটেকিং(এলওইউ) নিয়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন এই দুজন। পিএনবি এই তথ্য প্রকাশের আগেই, দেশ ছেড়ে চম্পট দিয়েছেন প্রতারণাকাণ্ডের কিংপিন নীরব ও তাঁর মামা মেহুল। ইতিমধ্যেই এই প্রতারণার তদন্তে নেমেছে ইডি, সিবিআই, এসএফআইও ও আয়কর দফতর। এই মামলায় হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী ও মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বিশেষ আদালত।
এই বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির জেরই অবশেষে লেটার অফ আন্ডারটেকিং ব্যবস্থায় আপাতত দাঁড়ি টালন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন