কলকাতা: ভারতী ঘোষের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে । দাসপুরে প্রতারণা ও তোলাবাজি মামলার ঘটনায় পরপর পুলিশ অফিসাররা অভিযুক্ত হচ্ছেন । গ্রেফতার হচ্ছেন পুলিশ অফিসাররা । রাজ্য পুলিশের পক্ষে তদন্ত অসম্ভব হতে পারে । তাই বৃহস্পতিবার সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার।ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে ।
এদিকে,ভারতী ঘোষ ও তাঁর স্বামীর নতুন সম্পত্তির হদিশ পেল সিআইডি । অন্যদিকে, ইউনিস আলি মণ্ডলের বিরুদ্ধে আবার গোরু পাচারের অভিযোগ আনলেন প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ ।
সিআইডি তদন্তে ভারতী ঘোষ ও তাঁর স্বামীর নতুন সম্পত্তির হদিশ মিলল । হাইকোর্ট পাড়ায় ভারতী ও রাজুর নামে একটি বাড়ির একটি তলা কেনা হয় । ২০০২ সালের পরে কেনা হয় বাড়ির ওই অংশ । সিআইডি তদন্তকারীদের নজরে এখন ওই সম্পত্তি । আবার বৃহস্পতিবার এক অডিও বার্তায় ভরতী ঘোষ বলেছেন, মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে ফাঁসাতে ইউনিসের মদত নিচ্ছে সিআইডি । অডিও বার্তায় ভারতী ঘোষ বলেন, আমি ভারতী বলছি । ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে আজ আমি আন্তর্জাতিক গোরু পাচারকারী ইউনিস আলি মণ্ডলের গল্প বলব । এবং প্রমাণ দিয়েই বলব । ইউনিস আলি ২০১৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর খড়গপুর লোকাল থানায় আসে । নিজের হাতে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। জানায়, ২ দিন আগে অর্থাৎ ২৪ সেপ্টেম্বর তার একটি গাড়ি, নম্বর- ডাব্লুবি ২৬এস ৮৩৭৪ , ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মেরেছে । গাড়িতে চালক ও এক ব্যক্তি ছিল । দুজনে আহত হয় । এফআইআরে কিন্তু ইউনিস কোথাও উল্লেখ করেনি গাড়িতে যে ভদ্রলোক ছিল সে ওর দাদা । আবদুল সামাদ মণ্ডল ।
এটাও বলেনি, যে ওই গাড়িতে টাকা আছে । যদি সত্যি সত্যি কারোর টাকা থাকে তাহলে সে কি বলবে না আমার গাড়িতে টাকা ছিল । দাদা যাচ্ছিল । ইউনিস কিন্তু, এটা বলেনি । কেন বলেনি । এটা একটা অদ্ভুত ব্যাপার । যাই হোক, ইউনিসের অভিযোগের ভিত্তিতে কেস হল খড়গপুর থানায়। কেস নম্বর ৫০৯/১৬ । তারিখ ২৬.০৯.২০১৬ । ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৯, ৩৩৭, ৩৩৮ ধারায় মামলা রুজু হয় । এবারে আপনারা বলুন যদি কেউ টাকা নিয়ে কোনও জায়গা থেকে অন্য কোনও জায়গায় যায় এবং গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে তাহলে সে অভিযোগ করার সময় লিখে দেবে তো গাড়িতে টাকা আছে । তাও এক-দু টাকা নয় । ৪৫ লাখ টাকা নাকি । যাই হোক ও লেখেনি ।
এরপর আরও বলি, ইউনিস আলি মণ্ডল কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থানে ছিল না । দুদিন পর এসে অভিযোগ লিখে দেয় । ফলে ভালো করে খোঁজখবর করেই ও অভিযোগ লিখেছে । যাই হোক, ওর গাড়ি সিজ় হয় । তারপর বহুবার কোর্টে এই কেস ওঠে । ইউনিস আলি কোর্টে যায় । আমাদের খড়গপুরে ডিআইজি, আইজি সাহেবের অফিস রয়েছে । কোথাও সে লিখিত দেয়নি, কোথাও বলেনি গাড়ি করে নাকি টাকা নিয়ে যাচ্ছিল । টাকা যদি সত্যিই যেত তাহলে ভদ্রলোক নিশ্চয়ই কোথাও লিখে দিত ।আমরা জানতাম, ইউনিস আলি মণ্ডল আন্তর্জাতিক গোরু পাচারকারী । সুতরাং, ও পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশের নজরদারিতে ছিল । সরকার, গোয়েন্দা সংস্থাকে জিজ্ঞাসা না করে নজরদারি রাখা যায় না । নজরদারি রাখতে রাখতেই জানা যায় ও আরও গোরুপাচার করতে চাইছে । এবং লোক নিযুক্ত করছে ।
এরপর আরও বলি, ইউনিস আলি মণ্ডল কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থানে ছিল না । দুদিন পর এসে অভিযোগ লিখে দেয় । ফলে ভালো করে খোঁজখবর করেই ও অভিযোগ লিখেছে । যাই হোক, ওর গাড়ি সিজ় হয় । তারপর বহুবার কোর্টে এই কেস ওঠে । ইউনিস আলি কোর্টে যায় । আমাদের খড়গপুরে ডিআইজি, আইজি সাহেবের অফিস রয়েছে । কোথাও সে লিখিত দেয়নি, কোথাও বলেনি গাড়ি করে নাকি টাকা নিয়ে যাচ্ছিল । টাকা যদি সত্যিই যেত তাহলে ভদ্রলোক নিশ্চয়ই কোথাও লিখে দিত ।আমরা জানতাম, ইউনিস আলি মণ্ডল আন্তর্জাতিক গোরু পাচারকারী । সুতরাং, ও পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশের নজরদারিতে ছিল । সরকার, গোয়েন্দা সংস্থাকে জিজ্ঞাসা না করে নজরদারি রাখা যায় না । নজরদারি রাখতে রাখতেই জানা যায় ও আরও গোরুপাচার করতে চাইছে । এবং লোক নিযুক্ত করছে ।
দুলাল মণ্ডল নামে একজনকে টাকা দিয়ে পাঠিয়েছে ফেকোহাটে । বেআইনি গোরু কেনার জন্য । এই খবর পাওয়ার পর ফেকোহাট থেকে দুলালকে গ্রেফতার করা হয় । বেলিয়াপাড়া পুলিশ স্টেশনে এফআইআর হয় । কেস নম্বর ৮৫/১৬। তারিখ ৬.১২.২০১৬ । ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৯, ৪১১, ১২০ বি ধারায় মামলা রুজু হয় । যে গাড়ি করে বেআইনি গোরু নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেই গাড়ি বাজেয়াপ্ত হয় । ৬ চাকার গাড়ি থেকে প্রচুর টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল । তা ফরেনসিকে পাঠানো হয় । এবং বেলিয়াপাড়ার এই কেসে ইউনিস আলি মণ্ডলও আসামি । কারণ সে দুলালকে গোরু কিনতে পাঠিয়েছিল । তাই তার নামও এফআইআরে আছে । তাকে ধরার জন্য বহুবার রেড করে পুলিশ । পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ উত্তর ২৪ পরগনাতেও যায় । কিন্তু, ধরা পড়েনি । পরবর্তী সময়ে সে হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করে । সেখানে জানায়, তার ৪৫ লাখ টাকা গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল । এরপর হাইকোর্টের কাছে আবেদনটি তুলে নেয় । এর ভিত্তিতে হাইকোর্ট তার পিটিশনটিকে খারিজও করে ।
এটাই ইউনিস আলি মণ্ডলের পুরো গল্প । আপনারা এটুকু তো বুঝতে পারছেন একটা আন্তর্জাতিক গোরু পাচারকারী যাকে পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ বহুবার খোঁজার চেষ্টা করেছে । তার শাগরেদ ধরা পড়েছে । গোরুর গাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়েছে । যে নজরদারিতে ছিল, সেরকম একজন গোরু পাচারকারীকে সিআইডি পশ্চিমবঙ্গ ডেকে এনে তাকে দিয়ে অভিযোগ করাচ্ছে । তাকে বলছে, কমপ্লেন লিখে দাও । কী লিখতে বলছে । সেই পুরোনো গল্প । আগে অভিযোগ দায়েরের সময় সে যা লেখেনি, ৪৫ লাখ টাকার কথা, এখন তা লিখছে । এবং তাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে না ভাই তুমি করো কি । এত টাকা কোথা থেকে এল । সেদিন যে টাকা নিয়ে যাচ্ছিলে তা কোন ব্যাঙ্ক থেকে তুলেছিলে । টাকার উৎস দেখাও । এইগুলো তাকে জিজ্ঞাসা না করেই কেস করা হচ্ছে । বলা হচ্ছে, ভাই একটা কেস করে দাও তো এই অফিসারদের নামে । তাহলে তোমার গোরুপাচার ঠিক চলবে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন