কলকাতা : মুসলিম তোষণ করে ভোটে জেতার যে অঙ্ক কষছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই অঙ্ক ভুল। কেন ভুল বুধবার অঙ্ক কষেই কলকাতায় এক সমাবেশে প্রমাণ করলেন 'হিন্দু সংহতি’-র সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য। তিনি এক প্রকাশ্য সভায় বলেন, ভাবীকালের কাছে এ কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জবাবদিহি করতে হবে। দুই বাংলাকে এক করে তার ওপর হিন্দুদের অধিকার কায়েমে সক্রিয় হওয়ার ডাক দেন দেবতনুবাবু।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে দাবি করেছেন, এ রাজ্যে যেখানে লোকের ৩২ শতাংশ মুসলমান, ওদের দেখতেই হবে! এই মন্তব্য করে এ দিন দেবতনুবাবু সমাবেশে বলেন, “উনি ভাবছেন, নানা ভাবে চেষ্টা করছেন ওদের তুষ্ট করে ভোটব্যাঙ্ক বাড়াবেন বা বাড়াচ্ছেন। কিন্তু মুর্শিদাবাদে মোট জনসংখ্যার ৬৭ শতাংশ মুসলমান হওয়া সত্বেও ওই জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের এক জনও সাংসদ নেই। ২২ বিধায়কের মধ্যে তৃণমূল বিধায়ক মাত্র ৫ জন। মালদহের মোট বাসিন্দার ৫২ শতাংশ মুসলমান হওয়া সত্বেও ১২ জন বিধায়কের মধ্যে মাত্র ৫ জন তৃণমূল কংগ্রেসের। উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দার ৫১ শতাংশ মুসলমান হওয়া সত্বেও কেন ওখানে ভোটদাতারা তৃণমূল প্রার্থীকে না জিতিয়ে সিপিএমের মহম্মদ সেলিমকে জেতালেন?"
চুলচেড়া বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “অন্যদিকে দেখুন, রাজ্যের যে জেলায় মুসলমান সবচেয়ে কম, সেই পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৯ বিধায়কের ১৮ জনই তৃণমূল কংগ্রেসের। ওই জেলায় মুসলমান মাত্র পাঁচ শতাংশ। এর পরেই পুরুলিয়া। সেখানে ৯ বিধায়কের ৭ জনই তৃণমূল কংগ্রেসের। তার অর্থ, মুসলমানদের ভোটে নয়, এ রাজ্যে শাসক দল ক্ষমতাসীন হয়েছে হিন্দুদের ভোটেই।"
রাজ্যের মুসলিম-তোষণের উদাহরণ দিতে গিয়ে দেবতনুবাবু এ দিন ভাষণে বলেন, “উচ্চশিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ হয়েছে ৩৫০০ কোটি টাকা। সেখানে সন্ত্রাসবাদী কাজের ডিপো মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দ হয়েছে আরও ২০০ কোটি বেশি। মানে ৩৭০০ কোটি টাকা। মাদ্রাসাগুলিতে তৈরি হয় আতঙ্কবাদী।"
দেবতনুবাবু বলেন, "দেশ ভাগের সময় অখণ্ড বাংলার দুই-তৃতীয়াংশ আমরা হারিয়েছি। এপার বাংলায় সে সময় মুসলমান ছিল মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ। এখন বেড়ে হয়েছে ৩২ শতাংশ। অথচ, ওপার বাংলায় দ্রুত কমেছে হিন্দুর সংখ্যা ও শতাংশ। বাংলাদেশে হিন্দুদের সব অনুষ্ঠানের ওপর কোপ পড়েছে। ওখানে হিন্দুদের মঠ-মন্দির-সংস্কৃতি সব ধ্বংশ হতে বসেছে। হিন্দুদের আদি নাম বদলে রাখা হচ্ছে আরবি নাম। আসুন, আমরা সকলে মিলে অখণ্ড বাংলার হারানো মাটি ফিরিয়ে আনি।" ‘হিন্দু সংহতি’-র কোনও সদস্য-সমর্থক নেই। এই দাবি করে দেবতনুবাবু এ দিন বলেন, “আমাদের সবাই যোদ্ধা। ধর্মযোদ্ধা। যুদ্ধ অসুর সংস্কৃতির ইসলামের সঙ্গে। ওদের এক হাতে তরবারি। অন্য হাতে কোরান। বাংলার মাটি, সংস্কৃতিকে বাঁচাতে এই যোদ্ধাদের এগিয়ে আসতে হবে।"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন