পাথারকান্দি : রাজ্যের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার দুর্নীতি নির্মূলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও এর প্রভাব পড়ছে না মোটেও। বিভিন্ন বিভাগে লাগামহীন দুর্নীতি ও পুকুরচুরি সমানেই চলছে বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
এমন এক চাঞ্চল্যকর খবর সম্প্রতি প্রকাশ্য বেরিয়ে এসেছে। এক মাস দু মাস নয়, বছরের পর বছর ধরে ন্যায্য মূল্যের দোকান থেকে হকার মারফত কেরোসিন পাচ্ছেন না পাথারকান্দি নির্বাচন কেন্দ্রের ২৫টি গ্রামপঞ্চায়েতের (জিপি) সিংহভাগ সাধারণ জনগণ। সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীদের মধ্যে বিনয় পাল, দীপু নাথ, সুবল বৈদ্য, কাঞ্চন বৈদ্য, মিলন দাস, সঞ্জয় চক্রবর্তী রাজু রবিদাস, জগদীশ গোয়ালা, তবারক আলি, ফরমুজ মিয়াঁ, দীপক সতনামি, পঞ্চম দেব, রাজু বৈদ্য, প্রণয় বৈদ্য, চম্পক বৈদ্য, রিঙ্কু বৈদ্য প্রমুখ কোন পৃথিবীতে বাস করছেন তা ভাবতে তাঁদের অবাক লাগছে। তাঁরা জনান, গত ছয় থেকে সাত বছর ধরে হকাররা সরকারি বরাদ্দ কেরোসিন বণ্টন না করে চোরাপথে তা বিক্রি করে উদরপূর্তিতে ব্যস্ত। বিষয়টি বারকয়েক তৎকালীন ও বর্তমান বিধায়কের নজরে আনা হলেও নিটফল শূন্য। বাধ্য হয়ে চড়া দামে খোলাবাজার থেকে কেরোসিন কিনতে হচ্ছে তাঁদের পাশাপাশি আমজনতাকে। অথচ মাসের পর মাস নিয়ম মাফিক কেরোসিন তেলের সরকারি যোগান অব্যাহত রেখেছে সরকার।
অভিযোগকারিদের ভাষায়, ‘বিগত ১৯৯৬ সালে পাথারকান্দির তদানীন্তন বিধায়ক সুখেন্দুশেখর দত্তের আমলে এলাকার ২৫টি জিপি-র জন্য পাঁচজন করে প্রায় দুই শতাধিক হকার নিযুক্ত করে দুটি ওয়ার্ডে একজন করে হকারের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। প্রথম প্রথম হকাররা গ্রামে গ্রামে গিয়ে ন্যায্যমূল্যের কেরোসিন তেল বণ্টন করলেও গত কয়েক বছর ধরে তারা হাত পা গুটিয়ে বসে আছে। এমনও গ্রামের লোক আছেন যে তাদের হকার কে বা কারা তা-ও তারা জানেন না। বৃহত্তর এলাকার একাংশ গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রামে পৌঁছয়নি বিদ্যুতের আলো। এ ছাড়া সব এলাকায় সব সময়ে বিদ্যুতের দেখাও মিলে না। তাই আলো জ্বালাতে কেরোসিনে খুব প্রয়োজন।
সরকার জনগণের নামে নিয়মিতভাবে কেরোসিন তেল বরাদ্দ করে চললেও মাঝপথে হকাররা তা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। তাঁদের আরও অভিযোগ, মাসে প্রায় ৩৬ হাজার লিটার কেরোসিন বরাদ্দ হলেও তা জনগণের কাছে বণ্টন না করে কালোবাজারিদের হাতে প্রায় ৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে প্রায় দুই লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা তাদের পকেটস্থ হচ্ছে।
ঘটনাবলি বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের জানা থাকলেও তাঁরা নীরব বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। ক্ষোভের সঙ্গে তাঁরা বলেছেন, বিভাগীয় একাংশ আমলার সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার ফলে হকাররা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে শাসকদলের কেউ প্রতিবাদ না করায়ও ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে জনগণের মধ্যে।উল্লেখ্য, এক সময় পাথারকান্দি এওসি ডিপোর মাধ্যমে ২৫টি জিপি-র দুই শতাধিক হকারেরর মাধ্যমে সরকারি কেরোসিন তেল বণ্টন করা হত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন