শিক্ষক নিয়োগে পর্ষদ সভাপতি’র মন্তব্যে আরও বাড়ল বিতর্ক, তাহলে সত্যিই কি দুর্নীতি হয়েছে? - Aaj Bikel
শিক্ষক নিয়োগে পর্ষদ সভাপতি’র মন্তব্যে আরও বাড়ল বিতর্ক, তাহলে সত্যিই কি দুর্নীতি হয়েছে?

শিক্ষক নিয়োগে পর্ষদ সভাপতি’র মন্তব্যে আরও বাড়ল বিতর্ক, তাহলে সত্যিই কি দুর্নীতি হয়েছে?

Share This
 আজ বিকেল: এক ফোনেই চাকরি হারিয়েছেন হুগলীর হরিপালের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অরুণ কারক ও খানাকুলের সুপ্রিয় সরকার৷ টেটে পাস না করেও চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠছে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বিরুদ্ধে৷ চাঞ্চল্যকর দু’টি ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ বিচার চেয়ে দায়ের হয়েছে হাইকোর্টে মামলা৷ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ‘ভাঙলে’ও ‘মচকা’তে নারাজ পর্ষদ৷ এই প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতির নয়া মন্তব্য ক্ষোভের ঝাঁঝ আরও খানিকটা বাড়িয়েছে বলেই মনে করছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ৷

সম্প্রতি, রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগের জোড়া ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পর্ষদের উপর ক্ষোভ আঁছড়ে পড়েছে৷ শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ ক্ষোভ-বিক্ষোভ-বিতর্কের মাঝে পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘এক লক্ষ ৮০ হাজার শিক্ষক৷ নিয়োগের পরিধি ৭৪ হাজার৷ সেখানে দু’একটি ক্ষেত্রে কী ঘটনা ঘটল, সেটাকে বড় করে দেখবেন না৷ তবে, প্রশাসনিক ভাবে নিয়োগ নেওয়া, বিষয়টি দেখভাল করা জেলা কাউন্সিলের কাজ৷’’


পর্ষদ সভাপতির এহেন মন্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড় উঠতে শুরু করেছে৷ চাকরি-প্রার্থীদের একাংশের প্রশ্ন, শিক্ষক নিয়োগের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভুল ধরা পড়ার ঘটনা কেন স্বীকার করছে না পর্ষদ৷ কাজে ভুল হয় কিন্তু, এতবড় ভুল হয় কী করে? একজন টেট ফেল প্রার্থীর নাম কীভাবে চূড়ান্ত মেধাতালিকায় ঢুকে গেল? তাহলে কী কোনও নজরদারি নেই? নাকি, সবই টাকার খেলা চলছে? যদি, আরটিআইয়ে পাওয়া তথ্য প্রকাশিত না হত, তাহলে এই ভুল কি আদৌও ধরা যেত? টেট ফেল শিক্ষকদের মতো আরও কত শিক্ষক পর্ষদের নিয়োগ তালিকা রয়েছে? টেট নিয়োগ নিয়ে কি তাহলে সত্যিই দুর্নীতি হয়েছে? চাকরি প্রার্থীদের আশঙ্কা, পর্ষদের এমন ‘দু’একটি ঘটনা’র সৌজন্যে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বহু চাকরিপ্রার্থী৷


ঠিক কী অভিযোগ উঠছে পর্ষদের বিরুদ্ধে? গত ২০ ডিসেম্বর এক ফোনেই চাকরি হারান হুগলীর হরিপালের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অরুণ কারক৷ সংসদের তরফে অরুনবাবুকে ফোন করা হয় বলে অভিযোগ৷ স্কুলে ঢোকার পর তাঁকে হাজিরার খাতায় সই করতে দেওয়া হয়নি৷ কী কারণে তাঁকে সই করতে দেওয়া হয়নি,  তা অবশ্য স্পষ্ট করে স্কুলের তরফে জানানো হয়নি৷  স্কুলের তরফ থেকে চাকরিতে না আসার বিষয়টা মৌখিকভাবেই জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অরুণ কারক৷ লিখিতভাবে এখনও পর্যন্ত তাঁকে কিছুই দেওয়া হয়নি৷


অরুণ কারকের পাশাপাশি এক ফোনেই চাকরি গিয়েছে আরও এক শিক্ষকের৷ চাকরি খোয়ালেন খানাকুলের সুপ্রিয় সরকার৷ ফোনেই সুপ্রিয়কে স্কুলে যেতে নিষেধ করা হয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে৷ নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে কাজে যোগ দিয়েছেন শিক্ষকরা৷ হঠাৎই জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ থেকে ফোন এসেছে ওইসব কর্মরত শিক্ষকের কাছে৷ ফোন করে নিয়োগপত্র ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ৷


অন্যদিকে, পরীক্ষায় ফেল করেও বেমালুম চাকরি করার অভিযোগ৷ তথ্যের অধিকার আইনে তা প্রকাশ্যে আসার পরই হাইকোর্টে মামলা করে নতুন করে প্যানেল তৈরির দাবি জানিয়েছেন এক পরীক্ষার্থী৷ যদিও, পর্ষদ জানিয়েছে, তিনি টেটে উত্তীর্ণ। অথচ আরটিআই রিপোর্ট জানাচ্ছে, টেটে পাস করতে পারেননি ওই পরীক্ষার্থী। তারপরও তাঁকে নিয়োগপত্র দেওয়া হল কীভাবে? এই অভিযোগেই হাইকোর্টে মামলা এক পরীক্ষার্থীর। আরটিআই রিপোর্টে নির্দিষ্ট প্রার্থী ও স্কুলের নামও উল্লেখ করা হয়েছে৷


পরীক্ষার্থীর নাম পল্লবী মান্না৷ রোল নম্বর ১৩০০৮২২৬৫৷ টেটে সফলদের তালিকায় ৯ নম্বরে নাম ছিল পল্লবীর৷ বেড়াবেড়ি পোস্ট অফিসের মধুসূদনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপত্র পান তিনি৷ পল্লবীর টেটের উত্তরপত্র পরীক্ষায় আরটিআই অন্য এক পরীক্ষার্থীর৷ সেই আরটিআই রিপোর্টেই পল্লবীকে অকৃতকার্য জানানো হয়৷ 


আরও পড়ুন-

কোন মন্তব্য নেই: