বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের, আবীর খেলায় মাতল কর্মীরা - Aaj Bikel
 বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের, আবীর খেলায় মাতল কর্মীরা

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের, আবীর খেলায় মাতল কর্মীরা

Share This


বীরভূম   :  তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল পঞ্চায়তে নির্বাচনে বীরভূমের প্রতিটি আসনে জয়ের বিষয়ে আগেই নিশ্চিত ছিলেন। বিরোধীদের রুখতে তিনি আগে থেকেই বলেছিলেন তার কাছে বিরোধীদের জন্য নানান ঔষধ রয়েছে। ছোট ক্যাপসুল, ইঞ্জেকশন ছাড়াও তার কাছে রয়েছে উন্নয়নের ঔষধ। আর সেই সব ঔষধ প্রয়োগ করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বীরভূম জেলা পরিষদ দখল করতে চলছে তৃণমূল কংগ্রেস। জেলার গুটি কয়েক আসনে বিরোধীদের মনোনয়ন নিয়ে আর চিন্তিত নয় তৃণমূল। জেলার চার পাচটি ব্লকের ১০-১৫টি আসন ছাড়া সব আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয় লাভ করতে চলছে তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার মনোনয়নের শেষ দিনে সরকারি সময় শেষ হওয়ার আগেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের কর্মী সমর্থক এবং প্রার্থীরা জয়ের আনন্দে আবীর খেলায় উৎসবে মেতেছেন। এদিন বেলা ৩টে নাগাদ সিউড়ি জেলা পার্টি অফিসে একটি সাংবাদিক বৈঠকের পর পার্টি অফিসের ছাদ থেকে প্রার্থী এবং দলীয় কর্মী সমর্থকদের হাত দেখিয়ে অভিনন্দন জানান অনুব্রত মণ্ডল। সেই সঙ্গে তিনি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা অনেক খেটেছ। এবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দাও।

অন্যদিকে মনোনয়নের শেষ দিনেও বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে শাসক দল পুলিশের মদতে তাদের মনোনয়ন জমায় করতে দেয়নি। গত কয়েকদিনে বীরভূমের জেলা জুরে বিরোধীরা শাসক দলের বিরুদ্ধে এই একই অভিযোগ তুলেছেন। শুধু তাই নয় শনিবার জেলা সদর সিউড়িতে মনোনয়ন কেন্দ্রটিকেই রীতিমতো দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। জেলা মহম্মদ বাজার, রামপুরহাট, নলহাটিতে শাসক দলের সঙ্গে বিজেপি সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে গত কয়েকদিন এই মনোনয়নকে কেন্দ্র করে। প্রতিক্ষেত্রেই শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবী এটা তার ঔষধের দাওয়াই। বিরোধীদের দাবী অনুব্রতর ঔষধ মানে সন্ত্রাস, লাঠি, বোমা, গুলি, অথবা মারধর। উন্নয়ন যদি তৃণমূলের হাতিয়ারই হতো নির্বাচনে তাহলে বিরোধীদের রুখতে সন্ত্রাসের দরকার কি ছিল? প্রশ্ন বিরোধীদের।


সোমবার মনোনয়ন জমার শেষ দিনেই সময় শেষ হওয়ার আগেই কার্যত জয় ঘোষনা করলেন অনুব্রত মণ্ডল। এদিন তিনি সিউড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “বিজেপি বা সিপিএম জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী দিতে পারল না কেন? আমরা ওদের বলেছিলাম ওরা প্রার্থী দিতে না পারলে আমরা ব্যবস্থা করে দেব। কিন্তু তাতেও ওরা প্রার্থী দিতে পারল না। আমরা কোথাও কাওকে আটকায় নি।” গত কয়েকদিনে বীরভূমের বিজেপির হাত ধরে ঝাড়খন্ড রাজ্য থেকে মাওবাদিদের অনুপ্রবেশ এবং বিজেপি হয়ে ভোটে শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল।

শনিবার জেলা মহম্মদ বাজারে প্রায় হাজার খানেক বিজেপি সমর্থক এবং মাওবাদীরা ঝাড়খন্ড থেকে লোক এনেছিল বিজেপি। অনুব্রতর অভিযোগ ওরাই মহম্মদ বাজারে ঝামেলা করেছিল। আর পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছিল। এই ঘটনার পর অনুব্রতর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সোমবার থেকে ঝাড়খন্ড সীমানায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছিল। সেখানে ঝাড়খন্ড রাজ্য থেকে আগত প্রতিটি গাড়িকে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছিল এদিন। গোটা সীমান্ত এলাকায় নাকা চেকিং শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় লোকপুর থানার ওসি নীলতল বিশ্বাসকে তার পদ থেকে সরানো হয় সোমবার। তার জায়গায় নিয়ে আসা হঊ তরুণ চট্টরাজকে। এই বিষয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “প্রতিটি ঝামেলার মূলে হল ওই নিলোতপল। ওকে আরো আগে সরানো দরকার ছিল। মহম্মদ বাজারের ঘটনা, পাড়ুইয়ে, মল্লারপুরের সব ঘটনা ওর জন্য হয়েছে।” বিজেপির মাওবাদি প্রসঙ্গ নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “ওদের একজন নেতা সোমবারও সিউড়িতে এসেছে। আমরা জানতে পেরে বিষয়টি পুলিশকে জানাতেই সে পালিয়ে যায়। আমরা ওই নেতার গ্রেপ্তারের দাবী জানাবো পুলিশকে।”

জেলার মাত্র কয়েকটি আসনে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। আর মধ্যে একটি জেলা পরিষদ আসন, ২টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন ও ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন। বাকি সব আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয় লাভ করেছে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে এদিন অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “ওরা বলছে তৃণমূল প্রার্থী দিতে দেয় নি। কোথাও আমরা কাউকে আটকায় নি। ওদেরই প্রার্থী ছিল না। শুধু ওরা ঝাড়খন্ড থেকে লোক এনে ঝামেলা পাকিয়েছে। আর বলছে প্রার্থী দিতে দি নি। জেলা পরিষদে একটা আসনেও কেন ওরা প্রার্থী দিতে পারল না?”

কোন মন্তব্য নেই: