ঝাড়্গ্রাম: বনদফতরের টোপ দিয়েও অধরা থেকে গেল বাঘ। একদিকে বাঘ ধরতে যখন মরিয়া চেষ্টা চলাচ্ছে বনদফতর। ঠিক সেই সময় লালগড়ের বাজার এলাকায় ঢুকে পড়ল দলমার দাঁতালের দল। একেই বলে যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়। বাঘ আর হাতির দুই অতঙ্কে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে লালগড়ের বিভিন্ন এলাকার মানুষজনেরা। রবিবার ভোরে বিনপুর এক ব্লকের ব্লক সদর লালগড় বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায় ঢুকে পড়ে দালমার দাঁতালের দল। শনিবার রাতেই দলমা দলের প্রায় পনেরোটি হাতি ঢুকে পড়েছে লালগড়ের জঙ্গলে। মধুপুর,আমডাঙা,আমলিয়া,মেলখেড়িয়া সহ লাগোয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়ে হাতির দল। ফসলের ক্ষয়ক্ষতির সাথে সাথে এলাকার একটি মাটির ঘরও ভেঙেছে হাতির দল বলে জনা গিয়েছে বনদফতর সূত্রে।
এদিন ভোরে লালগড় বিডিও অফিস সংলগ্ন জনবহুল এলাকায় দুটি দাঁতাল ঢুকে পড়ে। আর তা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য পড়ে যায়। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়ছে শনিবার রাতে প্রায় পনেরো কুড়িটা হতির দল লালগড়ের বিভিন্ন গ্রামে হানা দেয়। আমলিয়া গ্রামে একটি মাটির বাড়ি ভেঙে দেয়। উল্লখ্য প্রায় আড়াই বছর আগে আমলিয়া গ্রামের কেচন মালকে হাতির দল ঘর টেনে নিয়ে পিষ্ঠ করে মেরে ছিল। শনিবার রাতে সেই কেচন মালের বাড়িটি ভেঙে দেয় হাতির দল।আমলিয়া থেকে হাতির দলটি জঙ্গলের রাস্তা ধরে মধুপুর,আমডাঙা হয়ে লালগড়ে গিয়ে ওঠে। লালগড়ের খুব কাছেই আমডাঙা গ্রামে ব্যাপক আকারে আলু সহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি করে হাতির দলটি। এই দলটি এখান থেকে কামরাঙ্গির জঙ্গলে ঢুকে যায়।তার আগে মেলখেড়িয়া গ্রামের লাগোয়া জঙ্গলে বাঘ ধারার দুটি ক্যামেরা ভেঙে ফলে হাতির দল।কামরাঙ্গি জঙ্গলের মূল দলের থেকে দুটি হাতি বিচ্ছিন্ন হয়ে রবিবার ভোরে চলে আসে বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায়। যদিও হাতি দুটি এখানে কোন ক্ষতি করেনি। তবে একবারে ব্লক অফিসের কাছে হাতি চলে আসায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের চেষ্টায় হাতি দুটিকে জঙ্গলে ফেরানো গিয়েছে।
অন্যদিকে শনিবার রাতে কাটপাহাড়ির কাছে একটি স্থায়ী হাতির হানায় অল্পের জন্য প্রানে বাঁচেন এক ব্যক্তি। রাস্তার সামনে হঠাৎ হাতি সামনে চলে আসায় ওই ব্যক্তি সাইকেল ফেলে দৌড় লাগায়। উন্মত্ত হাতিটি সাইকেলটিকে ভেঙে দেয়।তবে সদরে হাতি ঢোকা এই প্রথম নয়। বেশ কয়েক বছর আগে ঝাড়গ্রাম মহকুমা সদরের উপর দিয়ে একটি হাতি শহরের রাস্তার উপর দাপিয়ে বেড়িয়ে ছিল। সে যাত্রাতেও কোন ক্ষতি হয়নি। এছাড়ও ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়ায় জনবহল এলাকায় হাতি ঢুকে দরজা ভেঙে ঘরের মজুত চাল খেয়েছিল একটি হাতি। কয়েক মাস আগের ওই ঘটনায় হাড়িয়া খেয়ে মত্ত হাতিটি লেভেল ক্রসিংএর গেটও ভেঙে ফেলেছিল।রবিরার একেইভাবে দুটি হাতি লালগড় জনবহুল এলাকায় ঢুকে পড়তে রীতিমত হইচই পড়ে যায়। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। যদিও খুব ভোর ছিল বলে তেমন জনসমাগম ছিলনা।তবে এলাকায় বাঘ আর তার উপর হাতি এই যৌথ সাড়াশিঁ আক্রমনে দিশাহারা লালগড়বাসী।
ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকেও মাইকিং জারি রয়েছে। ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন “রাতে হাতি এলাকায় ঢুকে আমলিয়া গ্রামে একটি বাড়ি ভেঙেছে, ট্রাপ ক্যামেরা দুটি ভেঙেছে। বিডিও অফিসের কাছাকাছি চলে এসেছিল দুটি হাতি।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন