আজ বিকেল: মুখ ফিরিয়েছে প্রশাসন৷ এড়িয়ে গিয়েছে শাসকদল৷ টানা ২৩ দিনের অনশন চালিয়ে যাওয়ার পর এবার বিজেপির দ্বারস্থ হলেন মালদহ জেলার চাকরিপ্রার্থীরা৷ জানা গিয়েছে, আগামীকাল বুধবার মালদহের জেলা শাসকের দফতরের সামনে চাকরিপ্রার্থীদের অনশন মঞ্চে হাজির থাকতে পারেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়৷
শিক্ষা ও চাকরির সমস্ত আপডেট পেতে ফেসবুক পেজ লাইক করুন৷
অনশন মঞ্চে কৈলাস ও মুকুল রায়ের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে মালদহের রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা৷ চাকরিপ্রার্থীদের অনশন মঞ্চে বিজেপির দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতার উপস্থিতি ঘিরেও তৈরি হয়েছে জল্পনা৷ জানা গিয়েছে, বুধবার কৈলাস ও মুকুল দু’জনই অনশন মঞ্চে হাজির হয়ে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন৷
চাকরি সংক্রান্ত খবর জানতে ক্লিক করুন এখানে
তবে, চাকরি প্রার্থীদের অনশন মঞ্চে দেখা মিলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিকে৷ চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নাসহ কংগ্রেসের প্রথম শ্রেণির নেতারা৷দিয়েছে আশ্বাস৷ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য কংগ্রেসের তরফে বিনা খরচে চাকরিপ্রার্থীদের আইনি সহযোগিতাও আশ্বাস দেওয়া হয়৷ তবে, বুধবার অনশন মঞ্চে গিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কী আশ্বাস দেন কৈলাস ও মুকুলরা, সেটাই এখন দেখার৷
শিক্ষা সংক্রান্ত খবর জানতে ক্লিক করুন এখানে
দীর্ঘ প্রতিশ্রুতি বা ভোটের রাজনীতি নয়, এবার সরাসরি নিয়োগ ছাড়া আপাতত কিছুই ভাবছেন না অনশনরত চাকরিপ্রার্থীরা৷ কারণ, টানা ২৩ দিন অনশন করার পর প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসতে আর চাইছেন না চাকরিপ্রার্থীরা৷ তাঁদের দাবি, ২০০৯-১০ থেকে তিন তিনবার পরীক্ষা দেওয়ার পরও তাঁদের নিয়োগ নিয়ে শিক্ষা দফতর কোনও উচ্চবাচ্য করেনি৷ শিক্ষক নিয়োগে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অনশনে বসেছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ ইতিমধ্যে কয়েক জন অসুস্থও হয়ে পড়েছেন৷ কিন্তু বিচারাধীন বিষয় বলে দায় এড়াচ্ছে প্রশাসন৷ বিরোধী দলগুলি অবশ্য সহমর্মিতা জানাতে অনশন মঞ্চে হাজির হচ্ছে৷
[ শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে অর্ধনগ্ন অবস্থান! উঠল গুরুতর অভিযোগ ]
অনশনরতদের দাবি, বাম আমলের শেষ পর্যায়ে ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয় মালদহে৷ ১৩৩১টি শূন্যপদের জন্য পরীক্ষা দেন সাড়ে পাঁচ হাজার পরীক্ষার্থী৷ কিন্তু, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়নি৷ নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালে ওই পরীক্ষায় বেনিয়মের অভিযোগ তুলে ওই পরীক্ষার্থীদের নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হয়৷ সেই পরীক্ষাও বাতিল করে আবার ২০১৪ সালে তৃতীয় বার পরীক্ষা নেওয়ার পর ফলপ্রকাশ করা হয়৷ এক বছর পর নেওয়া হয় মৌখিক পরীক্ষা৷ কিন্তু, হাইকোর্টে মামলা রয়েছে বলে আটকে রাখা হয় নিয়োগের প্যানেল৷ অনশনকারী বাপন ঘোষ বলেন , ‘প্রশাসন বা শিক্ষা দন্তর হাইকোর্টে মামলার অজুহাত দেখাচ্ছে৷ আসলে ওরা অজ্ঞাত কারণে আমাদের নিয়োগ দিতে রাজি নয়৷’
[ ‘আপনাকে আমরা আর শিক্ষামন্ত্রী পদে সহ্য করতে পারছি না’ ]
তাঁর দাবি, গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রজিত বন্দ্যোপাধ্যায় মালদহ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে ১৪ দিনের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সংসদ চেয়ারম্যান সেই নির্দেশ না-মানায় চাকরিপ্রার্থীরা আদালত অবমাননার মামলা করেন৷ সেই মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবী জানান, নিয়োগের নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ৷ এতে মামলা দীর্ঘায়িত হয়৷ শেষ পর্যন্ত ৮ দিন আগে প্রায় ৫০ জন চাকরিপ্রার্থী জেলাশাসকের দফতরের সামনে অনশন শুরু করেন৷ তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন আরও দু’শো জন৷ ইতিমধ্যে পাঁচ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে৷ তিন জনের স্যালাইন চলছে অনশন মঞ্চেই৷ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি আশিস কুণ্ডু বলেন, ‘বিচারাধীন বিষয় তাই কিছু বলার নেই৷’
[ SSS-র 'মরা নদী'তে এখনও স্বপ্ন দেখছেন হাজার 'শিক্ষক' ]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন