দুর্গাপুর ও পাটনা: দুই গোষ্ঠীর দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত রানীগঞ্জ। চলল গুলি, বোমাবাজি, জ্বালিয়ে দেওয়া হল দোকান ঘর। রোষের হাত থেকে রেহায় মিলল না মন্দির। সংঘর্ষ আহত ১০ পুলিশ কর্মী সহ কমপক্ষে ৫০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে নামল র্যাপ, কমব্যাট ফোর্স।
ঘটনায় জানা গেছে এদিন দুপুরে রানীগঞ্জের বিভিন্ন আখড়া থেকে রামভক্তদের শোভাযাত্রা বের হয়। দুপুর নাগাদ রাজারবাঁধ হিলবস্তি এলাকায় বাধার মুখে পড়ে শোভাযাত্রা। তখনই দুই গোষ্ঠীর বচসা থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু মারমুখী দুই গোষ্ঠীকে সামাল দিতে ব্যার্থ হয় পুলিশ। ফলে নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। শুরু দু’পক্ষের ইট পাটকেল ছোড়াছুড়ি থেকে গুলি ও বোমার লড়াই। ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়।
ভাঙচুর হয় হাটিয়া বাজারের বিভিন্ন দোকানে। ভাঙচুর শুরু আশপাশে ঘরেও। আগুন ধরিয়ে দেয় বেশ কয়েকটি দোকানে, গাড়িতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে নামে বিশাল পুলিশবাহিনী। মারমুখী জনতাকে ছত্রভঙ করতে টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটানো হয়। জনতার ছোঁড়া বোমায় ডিসি (সেন্ট্রাল) অরিন্দম দত্ত চৌধুরির ডান হাত উড়ে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে দুর্গাপুরে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়াও আর ১০ পুলিশকর্মী আহত হয়। এছাড়া দুপক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে নামে র্যাপ, কমব্যাট ফোর্স। বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। আসানসোল মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারী জানান," গুজবে কান দেবেন না। এলাকায় শান্তি বজায় রাখুন। কিছু লোক হিংসা ছড়াচ্ছে। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না।" যদিও এদিন পুলিশের পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পাটনা: রাম নবমী পালনকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বিহারের ঔরঙ্গাবাদ। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের জেরে থমথমে পরিস্থিতি বিহারের বিভিন্ন জায়গায়। দেদার মারামারি, ইট–বৃষ্টি, ভাঙচুর এবং দোকানপাটে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল গোটা এলাকা। উল্লেখ্য, বিহারের ঔরঙ্গাবাদে রামনবমীকে উদযাপন সোমবার ফের একটি মিছিলে পাথর ছোঁড়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে শুরু হয় দু'পক্ষের সংঘর্ষ। যা থেকে পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে সেখানে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এই ঘটনায় বহু মানুষ জখম হয়েছেন বলে খবর।
ঔরঙ্গাবাদের রামচক এলাকাতে বিভিন্ন দোকানে অগ্নি সংযোগ করা হয় বলে খবর। মুহুর্তে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎপর হন ঔরঙ্গাবাদের জেলাশাসক রাহুল মহাজন মাহিওয়াল| মাহিওয়াল জানান, রাম নবমীকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোল বাধে। মিছিলের রুটকে ঘিরেই দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পাটনার আইজি নায়ার হাসনেইন খান পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রিত বলে দাবি করলেও, সূত্রের খবর হিংসার আগুন ক্রমেই ছড়াতে থাকে| গয়া ও সিওয়ানেও চলতে থাকে হিংসা। এরপর থেকে ঔরঙ্গাবাদে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। জানা গিয়েছে বিহারে সিওয়ানে শনিবার রাত থেকেই দু’টি সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রবল সংঘর্ষ হতে থাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশবাহিনী। উল্লেখ্য, এর আগে, রামনবমীকে কেন্দ্র করে বিহার প্রশাসনরে তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানি মূলক পোস্ট দেওয়া বন্ধ সমেত একাধিক সতর্কতা জারি করেছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন