শিলং (মেঘালয়): গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মেঘালয়ের পূর্ব গারোপাহাড় জেলায় এনসিপি-প্ৰাৰ্থী সহ মোট চারজনের ওপর আইইডি হামলা সংগঠিত করার পর নিৰ্বিচারে গুলি বৰ্ষণ করে তাঁদের মেরে ফেলার পর জিএনএলএ নামের রাজ্যের এক জঙ্গি সংগঠনের সেনাধ্যক্ষ সোহন ডি শিরার সন্ধানদাতাকে নগদ দশ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য পুলিশ। এই ঘোষণার পরই আজ শনিবার ভোরের দিকে সংসাক নির্বাচন কেন্দ্র এলাকার সামন্দা ব্লকের অন্তর্গত আদাংপাক গ্রামে ক্র্যাক কমান্ডোর ১০ স্পেশাল ফোর্সের এক সশস্ত্র দলে সঙ্গে জিএনএলএ-র প্রচণ্ড গুলি সংঘর্ষে জঙ্গি সংগঠনের সেনাধ্যক্ষ সোহন মারা যাওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীরা বৃহৎ সাফল্য করেছে। এজন্য রাজ্যজুড়ে বাহবা কুড়োচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কমান্ডোবাহিনীর জওয়ানরা।
উল্লেখ্য, মেঘালয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী তথা দুর্ধর্ষ উগ্ৰপন্থী সংগঠন গারো ন্যাশনালিস্ট আর্মি (জিএনএলএ)-র নাশকতায় মেঘালয়ের ৪৩ নম্বর উইলিয়ামনগর উপজাতি তফশিলি আসনে এনসিপি প্রার্থী জনাথন এন সাংমা-সহ চারজনের মৃত্যুতে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে মেঘালয় পুলিশ সোহন ডি শিরার সন্ধানদাতাকে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে নগদ ১০ লক্ষ টাকার পুরস্কারের ঘোষণা করেছিল। এই পুরস্কার ঘোষণার পর গোপন সূত্ৰে মেঘালয় পুলিশের কাছে খবর আসে জিএনএলএ-র সেনাধ্যক্ষের অজ্ঞাত ঘাঁটির তথ্য। সে অনুসারে গতকাল রাতে পূর্ব গারোপাহাড় জেলার সংসাক নির্বাচন কেন্দ্রের ডবু থানা এলাকার সামন্দা ব্লকের অন্তর্গত পাহাড়ি ঘন জঙ্গলাকীর্ণ আদাংপাক গ্রামে ক্র্যাক কমান্ডোর ১০ স্পেশাল ফোর্সের এক সশস্ত্র দল অভিযান চালায়। গোপন ঘাঁটিতে সোহনের সঙ্গে আরও কয়েকজন জঙ্গি ক্যাডারও ছিল। নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ডেরা ঘিরে ধরলে আতর্কিতে গুলি হামলা করে বসে জিএনএলএ জঙ্গিরা। প্রত্যুত্তর দিতে থাকে কমান্ডোরাও। গোলাগুলিতে সংঘর্ষস্থলেই মাথা ও মুখে গুলিবিদ্ধ হয়ে খতম হয়ে যায় সংগঠনের মাথা সোহন। তবে গোলাগুলিতে সোহন মৃত্যুর কোল ঢলে পড়েছে দেখে সঙ্গী অন্য জঙ্গি ক্যাডাররা পালিয়ে গা ঢাকা দিতে সক্ষম হয়।
পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলি ভরতি ম্যাগাজিন সাঁটা একটি অত্যাধুনিক বন্দুক, পিস্তল, গুলি-সহ বহু বিস্ফোরক সামগ্ৰী উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে, সোহন ডি শিরাকে ঘিরে মেরে ফেলায় মেঘালয় পুলিশ, বিশেষ করে স্পেশাল ফোর্সের কৃতিত্বকে একমুখে সকলে সাধুবাদ জানালেও কে জঙ্গি-প্রধানের সন্ধান দিয়েছে তা জানতে রাজ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, খোদ সোহনের কোনও সহযোগীই তার সন্ধান দিয়েছে পুলিশকে। সোহন ডি শিরার অন্য সহযোদ্ধারা নিরাপদে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এমন সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে অনুসন্ধিৎসুদের মধ্যে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন