মহাকরণের ঐতিহ্য ভূলুন্ঠিত, অভিযোগ বিধানসভায় - Aaj Bikel
মহাকরণের ঐতিহ্য ভূলুন্ঠিত, অভিযোগ বিধানসভায়

মহাকরণের ঐতিহ্য ভূলুন্ঠিত, অভিযোগ বিধানসভায়

Share This

কলকাতা  : মহাকরণের ঐতিহ্য ভূলুন্ঠিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হল বিধানসভা অধিবেশনে। মঙ্গলবার অধিবেশনের উল্লেখপর্বে এ নিয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন প্রসঙ্গের উত্থাপক সিপিএমের সুজিত চক্রবর্তী এবং দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। উল্লেখপর্বে হট্টগোল হয় বাড়তি বিদ্যুৎমাশুল নিয়েও।
সুজিতবাবু বলেন, ২০১৩ সালে সংস্কারের নামে মহাকরণ থেকে সরকারি নানা বিভাগ সরিয়ে দেওয়া হয়। অনুপম স্থাপত্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব ভবনটির বড় সম্পদ। এ ছাড়াও এই সচিবালয় থেকে প্রফুল্ল ঘোষ, প্রফুল্ল সেন, জ্যোতি বসু প্রমুখ নামী মুখ্যমন্ত্রীরা রাজ্য চালিয়েছেন। আজ যে ভাবে থাকা উচিত, ঐতিহ্যের ভবনটির, সেভাবে এটা নেই। বরং অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে।

এই ভবনেই বিনয় বসু, বাদল বসু ও দীনেশ গুপ্ত জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে অত্যাচারী ব্রিটিশ প্রশাসককে গুলি করেন। যে সিঁড়ি দিয়ে ওই তিন বিপ্লবী উঠেছিলেন, সেটি এখন বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের গুদাম হয়ে আছৈ। পুরনো দেওয়াল-ঘড়িগুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, সেগুলি হায়িয়ে যাওয়ার পথে।

বক্তব্য চলাকালীন সুজিতবাবুর বৈদ্যুতিঈ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় তিনি প্রতিবাদ করেন। অধ্যক্ষ পাল্টা বলেন, “আপনি সহজ কথা সহজ করে বলতে পারেন না। বলতে দেওয়া হবে না।“ সুজন চক্রবর্তী পাল্টা প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযোগ তোলেন, বিরোধীরা অধিবেশে কিছু বলতে গেলে তাঁদের কন্ঠরোধ করা হয়।

একই রকম বাদানুবাদ হয় উল্লেখপর্বে রুনু দত্তর উল্লেখের সময়। তাঁর বক্তব্যের বিষয় ছিল, বাড়তি মাশুল। তাঁকেও অধ্যক্ষ থামিয়ে দিলে প্রতিবাদে সরব হন সুজন চক্রবর্তী। অধ্যক্ষ পাঢ়্টা তাঁকে বলেন, আপনি এভাবে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে পারেন না!অধিবেশনকক্ষেই বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় রুনু দত্তকে বলেন, “ঘরে আছি। যদি দেখা করেন, বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পারি।“

অধিবেশনের উল্লেখপর্বে হইচই হয় বাম নেত্রী জাহানারা খানের অভিযোগকে কেন্দ্র করেও। তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসের ২৬ তারিখে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে সমর্থকরা তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনীর হাতে আক্রান্ত হয়েছেন। একজনও গ্রেফতার হয়নি। এ ভাবে গুন্ডারা অত্যাচার চালালে ফল হবে ভয়াবহ।“ শাসক বিধায়করা এই মন্তব্যের সমবেত প্রতিবাদ শুরু করলে বিরোধী বেঞ্চ থেকেও পাল্টা প্রতিবাদ ওঠে। সুজন চক্রবর্তীও উঠে প্রশ্ন করেন, কেন আমাদের এভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে?

বাধা পান বাম বিধায়ক খগেন মূর্মুও। উল্লেখপর্বে তাঁর বক্তব্যের প্রসঙ্গ ছিল কুশমন্ডির নির্যাতিতা নারী। দিল্লির ‘নির্ভয়া কান্ডের’ সঙ্গে তুলনা করে তিনি কিছু বলতে চাইলে অধ্যক্ষ আপত্তি তোলেন। বলেন, এই প্রসঙ্গ নিয়ে অধিবেশনে আগে আলোচনা হয়েছে। তাঁরও স্পিকারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। প্রতিবাদে হইচইয়করেন বিরোধীরা। এদিন অধিবেশের উল্লেখপর্বে মেটিয়াবুরুজের তৃণমূল বিধায়ক অভিযোগ করেন, রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। প্রায়ই দুর্ঘটনা হচ্ছে। পর্শু একজন মারা গিয়েছেন। বাম বিধায়ক রমা বিশ্বাসও উল্লেখপর্বে খারাপ রাস্তার প্রসঙ্গটি তোলেন।

কোন মন্তব্য নেই: