সারা দেশের সাথে সুন্দরবনেও শুরু হচ্ছে ব্যাঘ্র গণনা - Aaj Bikel
সারা দেশের সাথে সুন্দরবনেও শুরু হচ্ছে ব্যাঘ্র গণনা

সারা দেশের সাথে সুন্দরবনেও শুরু হচ্ছে ব্যাঘ্র গণনা

Share This


সুন্দরবন : সারা দেশের সাথে এবার সুন্দরবনে ও শুরু হচ্ছে বাঘ গণনার কাজ। সেই কারনে সোমবার থেকে তিন দিনের একটি প্রশিক্ষণ শিবির অনুষ্ঠিত হল সুন্দরবনের সজনেখালিতে। বাঘ গণনার জন্য বনকর্মীদের যারা প্রশিক্ষণ দেবেন সেই সমস্ত প্রশিক্ষকদেরকেই এই তিনদিন ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলবে সজনেখালীতে।

এবার ভারত ও বাংলাদেশের সুন্দরবনে যৌথভাবে এই গণনার কাজ হবে। তাই প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নিতে বাংলাদেশ থেকে ও চারজন বনকর্তা এসেছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্রাপিং এর মাধ্যমে বাঘ গণনার কাজ শুরু হবে। সারা দেশে বাঘ গণনার কাজ আগামী মে মাসে শেষ হলেও সুন্দরবনে বাঘ গণনার কাজ শেষ হতে ডিসেম্বর মাস লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন বনকর্তারা।

সুন্দরবনে বাঘের সঠিক সংখ্যা কত তা নিয়ে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। ২০০৪ সালে হওয়া বাঘ গণনার হিসেব অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ২৭৪টি। এরপর প্রায় আট বছর বন্ধ ছিল বাঘ গণনার কাজ। পরে ২০১১-১২ সালে ক্যামেরার সাহায্যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শুরু হয় এই ব্যাঘ্র সুমারির কাজ। এরপর থেকে এই পদ্ধতি ব্যবহার করেই সুন্দরবনে চলছে বাঘ গণনার কাজ। বন দফতরের দেওয়া শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যাটা একশোর আশেপাশে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এখন প্রতিবছরই সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘের গতিবিধির উপর নজর রাখতে বসানো হয় ক্যামেরা।

তবে সারা দেশেই প্রতি চার বছর অন্তর এই বাঘ গণর কাজ করা হয়ে থাকে। এবার বাঘ গণনার ক্ষেত্রে প্রতিবেশি দেশগুলিকে সাথে নেওয়া হয়েছে। সেই কারনেই সুন্দরবনে বাঘ গণনার প্রশিক্ষণ নিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও যোগ দিয়েছেন। সুন্দরবনের জঙ্গলে ক্যামেরা বসিয়ে সেই ক্যামেরায় বাঘেদের ছবি তুলে তা কম্পিউটারের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করেই সুন্দরবনে বাঘেদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।
এই বাঘ গণনার কাজ করার জন্য বেশকিছু বেসরকারি সংস্থাকেও সাথে নেওয়া হবে| বনকর্মীদের এই তিনদিনের ট্রেনিং দেওয়ার জন্য ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া থেকে এসেছেন ডঃ কমল কুরেশী ও তার তিন সহযোগী। এছাড়া ও এদিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য বনপাল(বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিনহা, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা নীলাঞ্জন মল্লিক সহ আরও অনেকে। খাতায় কলমে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ফিল্ডে প্রাক্টিক্যাল করে ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে।

প্রথম দফায় মোট ৬০০ টি ক্যামেরা বসিয়ে শুরু হবে এবারের বাঘ গণনার কাজ। মোট চল্লিশটি দলে বিভক্ত হয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে ক্যামেরা লাগানোর কাজ করবেন বনকর্মীরা। মোট দুটি ধাপে ক্যামেরা লাগানোর কাজ করা হবে। বন আধিকারিকদের দাবী শুধু বাঘ গণনা নয়, সুন্দরবনে বাঘের খাদ্য হরিণ বা বন্য শুকরের উপস্থিতি বর্তমানে কেমন রয়েছে সেটি ও জানা যাবে এই ক্যামেরা ট্র্যাপিং এর মাধ্যমে।
এ বিষয়ে মুখ্য বনপাল(বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিনহা বলেন, “ বাঘ গণনার জন্য এই ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতি অনেক বেশী বিজ্ঞান সম্মত, এরফলে অনেক নির্ভুল তথ্য পাওয়া যায়। বাঘের পাশাপাশি ক্যামেরার সাহায্যে জঙ্গলের অন্যান্য জীব জন্তুর উপস্থিতি ও লক্ষ্য করা যায়”।

কোন মন্তব্য নেই: