আজ বিকেল: গাইঘাটা ব্লকে কৃষক বাজার বা কৃষি মন্ডি তৈরি হয়েছে সরকারি কৃষি খামারে। এখানে কৃষকের ধান সরকারি সহায়ক মূল্য ১৫৫০ সঙ্গে ২০ অর্থাৎ মোট ১৫৭০ টাকায় কেনা হচ্ছে। কিন্তু, খাতায় কলমে এই ব্যবস্থা চালু থাকলেও কৃষকের অভিজ্ঞতা বলছে অন্য কথা৷
গাইঘাটা ব্লকের চাঁদপাড়ার দেবীপুরের এক কৃষকের অভিযোগ, গত ৫ জানুয়ারি ২০১৮, নতুন চটের ৩১টা বস্তায় মোট ১৯ কুইন্টাল ৫২ কেজি ধান নিয়ে যায় বিক্রি করতে৷ বস্তা পিছু ৪ কেজি করে বাদ দিয়ে মোট ১২৪ কেজি বাদ যায়৷ মোট ধানের দাম হয় ৩০৬১০ টাকা৷ তার থেকে ২৩৫৫ টাকা বাদ দিয়ে কৃষক পেল ২৮,২৫৫ টাকা। ৩১টা বস্তার প্রতিটির বাজার দাম ২৮ টাকা করে মোট ৮৬৮ টাকা৷ বস্তা সমেত ধান নেবার ফলে কৃষকের গাট গচ্চা গেল৷
কৃষকের বাড়ি থেকে ভ্যানে করে বোয়ে নিতে কুইন্টাল প্রতি ২০ টাকা করে মোট ৬২০ টাকা লেগেছে৷ এর সঙ্গে ১ জনের মজুরি ২৫০ টাকা৷ সব মিলিয়ে ধান বিক্রি করতে গিয়ে (বাদ যাওয়া ধান, বস্তা, বহন খরচ, মজুরি খরচ ধরে) কৃষকের ৪০৯৩ টাকা গেল। আসলে কৃষক ধানের দাম পেল ২৬৫১৭ টাকা। কুইন্টাল প্রতি দাম হল ১৩৫৮ টাকা। কিন্তু কৃষকের টাকা এখনও ব্যাংক ঢোকেনি৷
এবার দেখা যাক ফড়েদের করবার৷ ফড়েরা ৬০ কেজি বস্তার ধানের দাম বলেছিল ৮৮০ টাকা, কুইন্টাল প্রতি ১৪৬৬ টাকা। তাতে বস্তা, বহন, মজুর খরচ লাগতো না। ফলে ১০৮ টাকা কুইন্টাল প্রতি গচ্চা দিতে হত না, কৃষক টাকাটা নগদ পেত। ফরের কাছে বিক্রি করলে কৃষক বাজারের তুলনায় ২০২৩ টাকা বেশি পেত।
অথচ খাদ্য মন্ত্রী বলেছেন সরকার কৃষকের ধান সহায়ক মূল্যে কিনছে। কৃষি বাজারে মূলত ধান বিক্রি করছে কুটিয়াল ও ফোরে-মহাজনরা। ম্যাটাডোর করে ধান তারাই দিচ্ছে, প্রচার হচ্ছে কৃষক। যত গর্জে তত বর্ষে না। তাই কৃষকরা অত ঝক্কি ঝামেলার মধ্যে না গিয়ে বাড়িতে বিক্রি ভালো মনে করছে। সরকারের পক্ষ থেকে গ্রামে মৌজা ভিত্তিক ধান কিনলে কৃষক লাভবান হত।
অবশেষে, উৎপাদন খরচ আর বাজারে বিক্রি ধরলে লোকসানের বহর অনেক বেশি। এভাবে কৃষক ঠকানো রাজনীতি, অর্থনীতির কত দিন চলবে? এর বিরুদ্ধে কৃষকের আন্দোলন শুরু হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন