গঙ্গাসাগর : প্রচলিত কথাতেই আছে ‘সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার’| তাই সমস্ত বাধা বিঘ্ন উপেক্ষা করে দেশের নানা প্রান্ত থেকে গঙ্গাসাগরের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন পূণ্যার্থীরা| বিখ্যাত হিন্দু তীর্থস্থান গঙ্গাসাগর সাগর দ্বীপে অবস্থিত| প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি নাগাদ মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে এখানে বিরাট মেলা হয়| মকরসংক্রান্তির ভোরে গঙ্গায় স্নান করে স্থানীয় কপিল মুনি মন্দিরে পুজা দেন পূণ্যার্থীরা| কিন্তু, গঙ্গাসাগর যেতে হলে পূণ্যার্থীদের পার হতে হয় মুড়িগঙ্গা নদী। কিন্তু দিনের পর দিন মুড়ি গঙ্গা নদীতে পলি পড়ার ফলে ভাঁটার সময় এই নদীতে যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে সারা দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা এই নদীর দু’পারেই আটকে থাকতে হয় যাত্রীদের। আর এই সমস্যাই এ বছরের গঙ্গাসাগর মেলার প্রধান সমস্যা বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষজন।
গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গনে আসতে হলে পূণ্যার্থীদের পার হতে হয় মুড়ি গঙ্গা নদী। কিন্তু নদীতে চড়া পরে যাওয়ার কারনে প্রতিদিনই সাত আট ঘণ্টা এই নদীতে যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকছে। ফলে সমস্যায় পড়ছেন গঙ্গাসাগর মেলায় আসা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পূণ্যার্থীরা। মুড়ি গঙ্গার নাব্যতা বাড়াতে গত একমাস ধরে ড্রেজিং এর কাজ চললে ও তাতে এমন কিছুই লাভ হয়নি।ফলে ভাঁটার সময় নদীতে জল কম থাকার কারনে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ভেসেলে যাত্রী পারাপারের কাজ। এ বছর অন্য কোথাও কুম্ভমেলা না থাকার ফলে প্রচুর যাত্রী সমাগম হবে এই গঙ্গাসাগর মেলায়। ইতিমধ্যেই শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত তিনলক্ষের বেশী পূণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে স্নান করেছেন। আগামী দু’দিনে এই সংখ্যাটা কুড়ি লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি প্রশাসনের।
মুড়ি গঙ্গায় পলি পড়ার কারনে যাত্রী পারাপারের সমস্যা তৈরি হওয়ায় ইতিমধ্যেই তিরিশটি ভেসেল ও চারটি বার্যে করে নদীতে যাত্রী পারাপারের কাজ চলছে। যাতে অল্প সময়ে বেশী মানুষকে নদী পারাপার করা যায় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবুও এই বিশাল পরিমাণ জনজোয়ারকে মুড়িগঙ্গা পার করিয়ে সাগরমেলা প্রাঙ্গনে নিয়ে যাওয়াই চ্যালেঞ্জ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কাছে। অন্যদিকে ভাঁটার সময় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার ধৈর্য কতটা পুনারথিরা রাখতে পারেন সেটাও দেখার সব মিলিয়ে এবার গঙ্গাসাগর মেলায় এই মুড়িগঙ্গার চরা যথেষ্ট চিন্তায় রেখেছে প্রশাসনকে। যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, “ ভাঁটার সময় মাত্র তিনঘণ্টা যাত্রী পারাপার করা যাচ্ছে না। তবে আমারা বিগত বছর গুলির তুলনায় অনেক বেশী ভেসেল ও বার্যের ব্যবস্থা করেছি যাতে যাত্রী পারাপারে কোন সমস্যা না হয়|”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন