ডেঙ্গু মোকাবিলার নামে শহরে চলছে হরির লুট - Aaj Bikel
ডেঙ্গু মোকাবিলার নামে শহরে চলছে হরির লুট

ডেঙ্গু মোকাবিলার নামে শহরে চলছে হরির লুট

Share This

বনগাঁ: জ্বরে কাঁপছে গোটা মহকুমা৷ পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা৷ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠছে৷ চলছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ৷ কিন্তু, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মহকুমার দু’একটি ‘দরদী’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও মাঠে নেমে পড়েছে৷ ডেঙ্গুর  বিরুদ্ধে প্রচারে নেমে সরকারের ঘার ভেঙে টাকা লুটেরও চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ বাড়িয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলার মোটা টাকার বরাতও ওই সংস্থাগুলির কব্জায় যাচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ যখন ডেঙ্গু-অজানা জ্বরে কাবু গোটা মহকুমা, ঠিক তখনই ভুঁইফোড় সংবাদপত্রের পাতাজুড়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে দায় সারছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি৷

অভিযোগ, ডেঙ্গু মোকাবিলায় জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বনগাঁ মহকুমায় বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে বিভিন্ন দফতর৷ কিন্তু, মাঠে নেমে কাজের বদলে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির ‘কাছের’ ভুঁইফোড় সংবাদপত্রের পাতাজুড়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ সূত্রের খবর,  সরকারি ‘নথিভূক্ত’ নয় এমন কাগজেও বড়বড় বিজ্ঞাপনও দেওয়া হচ্ছে কোনও রশিদ ছাড়াই৷ পাতাজোড়া বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংস্থাগুলিতে আসা ‘পেট্রোডালার’ রাতারাতি তার চরিত্র বদল করে ফেলছে৷  সমাজ সেবার আড়ালে দিনের আলোয় চলছে বিজ্ঞাপনী ব্যবসার নয়া কারবার৷

এহেন কারবারে আকাশে উড়ছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা৷ অভিযোগ, কিন্তু কিছু ‘কাজ’ না করেই সরকারি খাতায় দেখানো হচ্ছে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজের বাহার৷ খাতায়-কলমে জমা হওয়া ‘অবাস্তব’ রিপোর্ট সরকারের ঘরে পাঠিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করা হচ্ছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে৷ আর এভাবেই নামে অলাভজনক সংস্থা হলেও ডেঙ্গু নিয়ে লাভের অঙ্ক কষতে শুরু করে বেশ কয়েকটি সংস্থা৷

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সংস্থাগুলি নিজের  ঢাক পেটালেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উল্টো ছবি৷ ইতিমধ্যেই জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়েছে গাইঘাটা ব্লকে৷ ডেঙ্গুতে  আক্রান্ত হয়ে রোগীরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি  রয়েছেন৷  কিন্তু, সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও দেখা যাচ্ছে মশার উপদ্রব। গোটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র জুড়ে রয়েছে ঝোপ-জঙ্গল। নোংরা আবর্জনা৷ বৃষ্টির জল জমে কোথাও৷ অপরিষ্কার ডোবা-নালা৷ ঘুরছে মশার লার্ভা৷ অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে মশা মারার তেল স্প্রে করা হয় না। আর তাতেই বেড়েছে সমস্যা৷ 

ডেঙ্গু নিয়ে ‘কালবাজারি’র, ‘ফাঁকিবাজি’র সঙ্গে সঙ্গে গোটা মহকুমার ভয়াবহ হয়ে উঠেছে ডেঙ্গু আতঙ্ক৷ বাগদা থানার পাতুড়িয়ার পর এবার গাইঘাটা থানার চাঁদপাড়ায় অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের৷ আক্রান্ত আর ও কয়েক জন৷ মৃতের নাম অনুপ দাস (৩০)৷ অজানা জ্বরে ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গাইঘাটা থানার চাঁদপাড়া কোরোলা গ্রামে৷

মৃতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক দিন ধরে ওই যুবক জ্বরের প্রকোপে ভুগ ছিল৷ পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে অনুপকে ভরতি করা হয় চাঁদপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে৷ সেখানেও সুস্থ না হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তরিত স্থানান্তরিত করা হয় ওই যুবক৷ এরপর মৃত্যু হয় ওই যুবকের৷ মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগ, রক্ত পরীক্ষার পর ওই যুবকের শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু মিলে৷ কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর থেকে সঠিক চিকিৎসা পাইনি আক্রান্ত যুবক৷


কোন মন্তব্য নেই: