মেট্রোর টানেলে গ্রেনেড - Aaj Bikel
মেট্রোর টানেলে গ্রেনেড

মেট্রোর টানেলে গ্রেনেড

Share This

কলকাতা  : ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর টানেলে উদ্ধার হল গ্রেনেড ৷ বেলেঘাটা সুভাষ সরোবরের কাছে কাদাপাড়ার টানেলের ভিতর মেট্রো ট্র্যাকের পাশে উদ্ধার হয় গ্রেনেড জাতীয় বিস্ফোরকটি । এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বেলেঘাটা কাদাপাড়া এলাকায় । এরপরেই খবর যায় বম্ব স্কয়াডে ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বম্ব স্কয়াডের কর্মীরা ৷ ঘটনাস্থলে আসে ফুলবাগান ও মানিকতলা থানার পুলিশও ৷ গ্রেনেড উদ্ধারে আতঙ্ক ছড়ায় মেট্রো কর্মীদের মধ্যে ৷

বেলেঘাটা কাদাপাড়া এলাকায় চলছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ ৷ প্রতিদিনের মতো শনিবার রাতেও কাজ চলছিল ৷ মেট্রোর লাইনে কাজ করার সময় বিষয়টি নজরে আসে ৷ সুড়ঙ্গ খুঁড়তে গিয়ে গ্রেনেড দেখতে পান মেট্রো রেলের কর্মীরা ৷ খবর পেয়ে আসেন ডিসি, ইএসডি দেবস্মিতা দাস । খবর যায় কলকাতা পুলিসের বম্ব স্কোয়াডেও । যাবতীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে যান বম্ব স্কোয়াডের অফিসাররা । গ্রেনেডটি উদ্ধার করে নিয়ে যান তাঁরা । কোথা থেকে, কীভাবে এল গ্রেনেড, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, গ্রেনেডটি বহু পুরনো । অনেক আগেই মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল সেটি । এই ঘটনার জেরে মেট্রো ট্র্যাকে নিরাপত্তা আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ ।
এদিকে,ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোকে নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করতে চায় কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন । সম্প্রতি কেএমআরসিএলের বোর্ড মিটিংয়ে সেই মর্মে প্রস্তাবও পাশ হয়েছে । ওই প্রস্তাবে রেলবোর্ডের সিলমোহরের জন্য পাঠিয়েছেন মেট্রো রেলের কর্তারা । পাশাপাশি, প্রস্তাবিত নিউগড়িয়া,বিমানবন্দর মেট্রো পথও কিছুটা বদলানো হবে । সেটি বিমানবন্দর পর্যন্ত না টেনে ভিআইপি রোডের উপর হলদিরামেই শেষ করা হবে । বদলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পৌঁছবে বিমানবন্দর । হলদিরামে ২ টি মেট্রোর মধ্যে সংযোগকারী পথ থাকবে ।

এজন্য প্রকল্পের খরচ এবং অন্যান্য সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে সমীক্ষাকারী সংস্থা ‘রাইটস’ কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৭-’১৮ সালের বাজেটে ইস্ট-ওয়েস্ট প্রকল্পে বরাদ্দ প্রায় চারগুণ বাড়িয়েছে । গত বাজেটের ৫০০ কোটি থেকে এবার ওই বরাদ্দ হয়েছে ১,৯৩৭ কোটি টাকা । চালু প্রকল্পে সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত প্রথম পর্বের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ২০১৮ সালের জুন মাসে । হাওড়া ময়দান থেকে শিয়ালদহ-ফুলবাগান পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্বের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ২০১৯-এর ডিসেম্বরে ।

ইতিমধ্যেই সেক্টর ফাইভ থেকে হলদিরাম পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার অতিরিক্ত সম্প্রসারণের ছাড়পত্র পেয়েছে প্রকল্পটি । ২০১৭ সালের বাজেটে ওই কাজের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল । মেট্রো রেলের কর্তাদের দাবি, ওই প্রকল্প ছাড়পত্র পেলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কলকাতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে দাঁড়াবে । যাত্রীসংখ্যা দৈনিক দুই থেকে আড়াই লক্ষ বাড়বে । বর্তমান চেহারায় প্রত্যাশিত যাত্রীসংখ্যা যেখানে সাড়ে আট লাখের মতো । সেখানে ওই সংখ্যা বেড়ে ১০ থেকে সাড়ে ১০ লাখে পৌঁছতে পারে । হাওড়া, শিয়ালদহের মতো রেল স্টেশন ছাড়াও ধর্মতলা এবং করুণাময়ীর মতো বাস টার্মিনাসকে ছুঁয়ে যাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ।

 পরের ধাপে বিমানবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ অনুমোদন পেলে পরিবহণের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের গুরুত্ব আরও বাড়বে । পাশাপাশি, রাজ্য সরকার হাওড়া ময়দান থেকে নবান্ন হয়ে সাঁতরাগাছি পর্যন্ত প্রকল্পটিকে সম্প্রসারণে আগ্রহী । সেজন্যও প্রয়োজনীয় সমীক্ষার কাজ আগেই শুরু হয়েছে । সেক্ষেত্রে সাঁতরাগাছি এই প্রকল্পের আওতায় এলে কলকাতার তিনটি টার্মিনাল রেলস্টেশন, ২ টি বাসস্ট্যান্ড এবং বিমানবন্দরকে যুক্ত করবে এই মেট্রো রেল । তাই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর লাইনে গ্রেনেড পাওয়া যাওয়ায় রীতিমত আতঙ্কিত কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশনের কর্তারা । সেই কারনে মেট্রো ট্র্যাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার জন্য পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তারা ।

কোন মন্তব্য নেই: