দুর্গাপুর: সাড়ে তিন'শ বছরের প্রাচীন শিবের গাজন অনুষ্ঠান বন্ধের পুলিশি নির্দেশের প্রতিবাদে গোটা গ্রাম ভোট বয়কটের ডাক দিল। অভিযোগ, কোন একটি ঘটনায় পুলিশ নিরিহ গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার চালাছে। আতঙ্কে গ্রামছাড়া বহু মানুষ। নজিরবিহীন ঘটনার প্রতিবাদে সামিল কাঁকসার রক্ষিতপুর গ্রাম।
কয়েকদিন পরই রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। শুরু হয়েছে মনোনয়নের কাজ। তার মধ্যে ভোট বয়কটের ডাক দিল কাঁকসার রক্ষিতপুর গ্রাম। প্রশ্ন, কেন ভোট বয়কটের রাস্তায় নামল ওই গ্রামের বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, দিনকয়েক আগে গ্রামেরই এক যুবক টুকরো টকরো মৃতদেহ উদ্ধার হয় আসানসোলে কালিপাহাড়ী রেললাইনে। ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে সরব হয় গ্রামের বাসিন্দারা। সন্দেহের বশে এক বাসিন্দার বাড়ীতে ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। ঘটনায় প্রায় একত্রিশ জনের নামে পুলিশ মামলা দায়ের করে।
অভিযোগ গ্রামের নিরীহ বাসিন্দাদের নামে মামলা দায়ের করেছে। তাদের ধরতে গ্রামে তল্লাশির নামে তান্ডব শুরু করে পুলিশ। ওই আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া বহু মানুষ। গ্রামবাসী সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান," গ্রামের শিক্ষক থেকে প্রবীন নাগরিক একপ্রকার পুলিশের পায়ে ধরে অনুরোধ করেছিল। সামনে ঐতিহ্যপুর্ণ গ্রামে শিবের গাজন। তাই তার আগে এধরনের অত্যাচার যেন বন্ধ রাখা হয়। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ সে কথায় কর্নপাত করেনি।" উল্টে পুলিশ এক নিরহ সব্জি বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে। এমনকি গ্রামের সাড়ে তিন'শ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিবের গাজন অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দেয়। ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা গ্রাম।
শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামের ষোল আনার মিটিং ডাকে। সেখানেই ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নেই গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসী হরিসাধন রায়, গুরুপদ রায় প্রমুখ জানান," বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন থেকে শাসকদলের নেতৃত্বকে জানিয়েছি। কিন্তু সুবিচার মেলেনি। পুলিশ গ্রামের ধর্মীয় ভাবাবেগে বাধা দিচ্ছে। তাই ভোট বয়কট করা হবে। গ্রামের কেই বুথমুখো হবে না।" জানা গেছে, আগামী ২৭ চৈত্র শিবের গাজন শুরু। মন্দির প্রাঙ্গনে বসতে শুরু করেছে দোকান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মন্ডপ তৈরীর কাজও শুরু হয়েছে। তারমধ্যে পুলিশের কড়য় বার্তায় মুখ ভার গ্রামবাসীদের। দুঃশ্চিন্তায় গাজন পরিচালন কমিটিও। কাঁকসার মলানদীঘি পঞ্চায়েতের রক্ষিতপুর গ্রামে প্রায় আঠের'শ ভোটার। ইতিমধ্যে গ্রামে পোষ্টারও পড়েছে ভোট বয়কটের। দুর্গাপুর মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা জানান," বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।" (হি.স.)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন