শিশুর মাথায় পোকা দেখে ফেরাল হাসপাতাল, চিকিৎসা করলেন গ্রামীণ চিকিৎসক - Aaj Bikel
শিশুর মাথায় পোকা দেখে ফেরাল হাসপাতাল, চিকিৎসা করলেন গ্রামীণ চিকিৎসক

শিশুর মাথায় পোকা দেখে ফেরাল হাসপাতাল, চিকিৎসা করলেন গ্রামীণ চিকিৎসক

Share This


ক্যানিং : বছর সাতেকের শিশুর মাথা থেকে বের হল পোকা। একটা দু’টো নয়, প্রায় দু’শোর বেশি পোকা বের হল আনারুল সেখ নামে এক শিশুর মাথা থেকে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং-এ। তবে কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে চিকিৎসা করিয়ে নয়, স্থানীয় এক গ্রামীণ চিকিৎসকের হাত যশের ফলেই ওই শিশুর মাথা থেকে এত পরিমানে পোকা বের করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ওই শিশুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার অন্তর্গত ইটখোলা মাঝের পাড়ার বাসিন্দা আমির আলি সেখের ছেলে আনারুল সেখ। কিছুদিন আগে মাথায় বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় ফুসকুড়ি হয় তার। সারাক্ষণ মাথা চুলকাতে থাকলে পরিবারের লোক তাকে ন্যাড়া করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ন্যাড়া করার পর দেখা যায় মাথার কয়েকটি জায়গায় বেশ ক্ষত হয়েছে। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের অজ্ঞানতার কারণে তখনই ছোট্ট আনারুলের চিকিৎসা করাননি তাঁরা। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই ওই ক্ষতস্থানে ঘা হয়ে যায়। সেখান থেকে দুর্গন্ধও বের হতে শুরু করে। পাশাপাশি অসহ্য মাথার যন্ত্রণায় রীতিমত ছটফট করতে থাকে শিশুটি। এমতাবস্থায় পরিবারের লোকজন শিশুটিকে নিয়ে যান স্থানীয় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। অভিযোগ, সেখানে চিকিৎসা করা তো দূর, চিকিৎসকরা ভালভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষাও করেনি আনারুলের। এরপর পরিবারের লোকেরা অসহ্য যন্ত্রণায় ছটপট করা আনারুলকে নিয়ে যান সোনারপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে|

 কিন্তু সেখানেও চিকিৎসা করতে রাজি হননি চিকিৎসকরা। অবশেষে সেখান থেকে কলকাতার চিত্তরঞ্জন ন্যাশানাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে নাম মাত্র চিকিৎসার পর ফিরিয়ে দেওয়া হয় ছোট্ট ওই শিশুটিকে। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা আনারুলকে নিয়ে অবশেষে ক্যানিং স্টেশন লাগোয়া এক গ্রামীণ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয় পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, বড় বড় হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠানো আনারুলের চিকিৎসা করতে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরিবারের অসহতার কথা ভেবে ওই শিশুর চিকিৎসা শুরু করেন গ্রামীণ চিকিৎসক কুমুদ রঞ্জন ঘরামী। চিকিৎসা করতে গিয়ে তিনি দেখেন শিশুটির মাথার ক্ষতের মধ্যে জন্ম নিয়েছে পোকা। আর পচন ধরার কারণেই দুর্গন্ধ বের হচ্ছে।

 প্রায় চার ঘন্টার অপারেশনে একে একে প্রায় দু’শোর বেশী পোকা মাথা থেকে বের করেন ওই চিকিৎসক। পাশাপাশি মাথার ভিতরের পচা মাংস বাদ দিয়ে ওষুধ লাগিয়ে ড্রেসিং করে দেন তিনি। এই চিকিৎসার পর আপাতত স্বস্তি পেয়েছে শিশুটি। স্বস্তি পেয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরাও। যে চিকিৎসার জন্য একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে বেড়িয়েও লাভ হয়নি, সেই চিকিৎসা এই গ্রামীণ চিকিৎসকের হাত ধরে পাওয়ায় খুশি সকলে। আর এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও।

কোন মন্তব্য নেই: