অসহায় প্রাণীর গায়ে রং, এ কেমন হোলি? - Aaj Bikel
অসহায় প্রাণীর গায়ে রং, এ কেমন হোলি?

অসহায় প্রাণীর গায়ে রং, এ কেমন হোলি?

Share This

দোল উৎসব সকলের৷ এ দিন মানুষ আর পশু একই দলে৷ তাই হয়তো দোলের দিন কিছু আমোদগেঁড়ে জনতা নিজেদের আনন্দোৎসবে আদিখ্যেতার মাত্রা বাড়াতে রাস্তার কুকুর -বিড়াল -গরু -ছাগলদের ‘হলদে -সবুজ ওরাংওটাং ’ বানিয়ে আমাদের উৎসবে ওদেরও সামিল করি, এই মনোভাবের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে নিরীহ নেড়ি , হুলো -মেনিদের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে৷ 

ওঁরা ভুলে যান যে ওই রং ওদের ত্বকের পক্ষে বিপজ্জনক এবং ওরা যেহেতু নিজেদের পরিচ্ছন্ন রাখতে চেটে শরীর পরিষ্কার করে, ওই বিষাক্ত রং পেটে গিয়ে বিষক্রিয়া হতে পারে৷ অথচ সচেতনতার চিহ্নমাত্র নেই৷ ভাবটা এমন, আহা রে আমরা তো আদর করে ওদের রং দিয়েছি ! অথচ, কয়েক সপ্তাহ পর , আধুনিক সাবান প্রসাধনীর কৃপায় মনুষ্যকুলের বাঁদুরে আদর ক’দিনেই ফর্সা, জীবন স্বাভাবিক, ত্বক চকচকে৷ ও দিকে মানুষের বাঁদরামির ঠেলা সামলাতে বেচারা পথের সারমেয়কুল চামড়ায় হাজারো রকমের ব্যামো, পেটে বিষাক্ত রং নিয়ে যন্ত্রণায় নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকছে৷ গায়ে পোকা হচ্ছে, খেতে পারছে না৷ তখন তাদের কথা কে ভাবে ? আশ্চর্য, সবজান্তা শিক্ষিত মানুষের এমন বর্বর আচরণ বছরের পর বছর চলে আসছে৷

এমনকী শুধু বড়োরা নয়, এও দেখা যায় ছোটো ছেলেমেয়েরা রাস্তার কুকুরের গায়ে পিচকারি ছুড়ছে, আর তাদের মা-বাবা সে দৃশ্য হাঁ করে দেখছেন, প্রতিবাদ অবধি করছেন না৷ সে ক্ষেত্রে যুক্তি কী? না , আহা বাচ্চামানুষ অতশত বোঝে ? তা বোঝানোর দায়িত্বটা কার? যদি বাবা -মা বোঝাতে না পারেন, তবে আইন, বিচারই না হয় সে দায়িত্বটা নিক৷ নিজের আনন্দের জন্য অন্যকে কষ্ট দেওয়াটা কোন দেশি ভব্যতা ?  পশুদের গায়ে রং দেওয়া পশুক্লেশের সামিল৷ তাকে কি আইন করে দণ্ডনীয় অপরাধ ঘোষণা করা যায় না ? দরকার হলে পাড়ায় পাড়ায় নজরদারির ব্যবস্থা হোক বা বিশেষ পুলিশ নিযুক্ত করুক সরকার৷ দোলের অজুহাতে অসহায় কুকুর-বিড়ালকে হেনস্থা করতে যাঁরা পরোয়া করেন না , তাঁদের হাতেনাতে ধরা পড়লেই জরিমানা এবং কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক৷

কোন মন্তব্য নেই: