কলকাতা: কলকাতা পুরসভা এলাকায় নতুন সম্পত্তি কর নির্ধারণ পদ্ধতি ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট চালু করতে গিয়ে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। নতুনের পাশাপাশি পুরানো পদ্ধতির জিআর বা জেনারেল রিভ্যালুয়েশন পদ্ধতিতে কর জমা দেওয়ার সুযোগ রাখায় পুরসভা তার সুফল পেয়েছে হাতেনাতে। করের ব্যাপারে আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে চলেছে পুরসভাগুলি।
ঠিক হয়েছে, জলাশয় সংরক্ষণ করলে সেটির মালিককে পুরসভা সম্পত্তিকরে ছাড় দেবে। এই মর্মে ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপাল (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮’ ফের বিধানসভায় আনা হচ্ছে। এই সঙ্গে, ছাড় দেওয়া হবে প্রবীন নাগরিক, বিধবা, বিচ্ছিন্না মহিলা এবং প্রতিবন্ধীদের সম্পত্তিকরে। আনা হচ্ছে ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮’ এবং ‘দি হাওড়া মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮’।
এই বিলে বলা হয়েছে এলাকার পরিবেশ ভাল রাখতে যে কোনও জলাশয়ের উপর পুরসভা সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ কর ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে, কোনও রকম সুইমিং পুলকে এ ধরণের সুযোগ দেওয়া যাবে না। ৬৫ বছরের বেশি কাউকে ছাড় দেওয়া হবে ১০ শতাংশ কর। যুগ্ম নামে রাখা কোনও সম্পত্তির করদাতাও এই সুযোগ পাবেন। যে কোনও বয়সের বিধবা ও বিচ্ছিন্নাও পাবেন এই সুযোগ।
সম্পত্তিকরের দাবি গৃহমালিকের কাছে পাঠানো, এই খাতে অর্থ সংগ্রহ প্রভৃতি অন লাইনে মেটানোর বিধানও রাখা হয়েছে আইনে। ই মেল ও এসএমএসে পুরসভাগুলিকে করের বিল পাঠাতে বলার বিধানও রাখা হচ্ছে বিলে। বলা হয়েছে, করদাতারাও টাকা দিতে পারবেন অনলাইনে।
বাড়ির নকশা অনলাইনে মঞ্জুর করানোর বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখার অধিকার দেওয়া হয়ছে পুরকর্তৃপক্ষকে। কর, মিউটেশন, মালিকানা প্রডৃতি সুসংহতমাবে একটি স্থান থেকে মঞ্জুর করার কথা বলা হয়েছে বিলে। অনলাইন আবেদনের ৩০ দিনের মধ্যে সেটি গৃহিত হল কি না, তা আবেদনকারীকে জানাতে বলা হয়েছে বিলে।
পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ববি হাকিম-সহ ১১ জন বিধায়কের অধিবেশনে বলার কথা এই তিন বিল নিয়ে। শুক্রবার কংগ্রেসের অপূর্ব সরকার, তৃণমূল কংগ্রেসের জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং সিপিএমের সমর হাজরা তিন বিলকে স্বাগত জানান। অসুস্থ এক বিধায়কের মৃত্যুর খবর পাওয়ায় এর পরেই অধিবেশন স্থগিত করে দেন অধ্যক্ষ।শীঘ্রই বিধানসভা অধিবেশনে প্রয়োজনীয় আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, গত বছর সম্পত্তি কর থেকে কেবল কলকাতা পুরসভার আয় ছিল প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরে ইতিমধ্যেই এই খাতে আয় গতবারের অঙ্ককে ছাপিয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে গত আর্থিক বছরের তুলনায় এবার এখনও পর্যন্ত সম্পত্তি কর সংগ্রহ বেড়েছে সাত-আট শতাংশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন