অসমের পাথারকা‌ন্দি-ত্রিপুরা হ‌য়ে বাংলা‌দে‌শে অবাধে গবাদি পশু পাচার অব্যাহত - Aaj Bikel
অসমের পাথারকা‌ন্দি-ত্রিপুরা হ‌য়ে বাংলা‌দে‌শে অবাধে গবাদি পশু পাচার অব্যাহত

অসমের পাথারকা‌ন্দি-ত্রিপুরা হ‌য়ে বাংলা‌দে‌শে অবাধে গবাদি পশু পাচার অব্যাহত

Share This


পাথারকা‌ন্দি  : অসমের করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দির বিভিন্ন চোরাপথে ত্রিপুরা হয়ে গবাদি পশু পাচার সমানেই চলেছে। প্রশাসন যত ক‌ঠোর হচ্ছে, চোরাকারবারিরা ততই নতুন নতুন ফ‌ন্দি-ফিকির করে গোপন পথে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে পাচারবা‌ণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্রের কাছে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে, পাথারকা‌ন্দি মহকুমার বি‌ভিন্ন গোপন পথকে কা‌জে লা‌গি‌য়ে পার্শ্ববর্তী ত্রিপুরা রাজ্য হ‌য়ে বাংলা‌দে‌শে গরু পাচার ফের মাথাচড়া দি‌য়ে উঠেছে। প্রত্যক্ষদ‌র্শীদের কাছে শোনা গেছে, গত দিন-কয়েক ধ‌রে পাচারকা‌রীরা বি‌শেষ দু‌টো গোপন পথে গরু পাচার কর‌ছে। গোপন পথ দুটি যথাক্রমে হাইলাকা‌ন্দি থে‌কে সড়কপ‌থে রামকৃষ্ণনগর-আনিপুর-পাথারকা‌ন্দি হ‌য়ে চাঁদখিরা-কদমতলা সীমান্ত রাস্তা দি‌য়ে ত্রিপুরা। অন্য‌ হাইলাকা‌ন্দি থে‌কে আয়নাখাল-রাতাবাড়ি হ‌য়ে পাহা‌ড়ি-পথ দি‌য়ে পা‌য়ে হেঁটে নি‌ভিয়া-চেরাগি হ‌য়ে রোশনাবাদ ও পেঁচারঘা‌ট গ্রা‌মের রাস্তা ধ‌রে হা‌তি‌খিরা চা বাগান হ‌য়ে তিলভূ‌মের প‌থে ত্রিপুরা। জানা গে‌ছে, মধ্য অসমের লংকা-হোজাই প্রভৃ‌তি স্থান থে‌কে ব‌হিঃরা‌জ্যের গরু পাইকাররা গরু কিনে স্থা‌নীয় পাচারচক্রের হা‌তে তুলে দেয়।

বাংলা‌দে‌শে গরুর দাম ভার‌তের চে‌য়ে চারগুণ বেশি। তাছাড়া সে দে‌শে গরুর চা‌হিদাও প্রবল। গরু বোঝাই ল‌রিগু‌লো‌তে নেশাজা‌তীয় সাম‌গ্রীও পাচা‌রের খবর পাওয়া গে‌ছে। রা‌তের অন্ধকা‌রের সু‌যোগ‌কে কা‌জে লা‌গি‌য়ে চোরাকারবা‌রিরা একাংশ পু‌লিশ ক‌র্মীর মদ‌তে গরু-সহ নেশাদ্রব্য যেমন ক‌রেক্, ফে‌ন্সি‌ডিল, গাঁজা ইত্যা‌দি প্রথ‌মে ত্রিপুরা রা‌জ্যের কদমতলা পৌঁ‌ছে দেয়। ‌সেখান থে‌কে গরুগু‌লো যথাক্র‌মে উত্তরত্রিপুরার ম‌হেশপুর, ব‌জেন্দ্রনগর, ইয়াকুবনগর, কুর্তারপাশা এলাকার ভারত-বাংলা‌দেশ সীমান্ত টপ‌কে বাংলা‌দে‌শের জু‌রি, কুলাউড়া, ফেঁচুগঞ্জ প্রভৃ‌তি স্থা‌নে পৌঁছে চালান করা হয়। ‌সে সব স্থান থে‌কে গরুগুলো বি‌শেষ চক্রের মাধ্য‌মে লঞ্চ ও স্টিমার সহ‌যো‌গে সি‌লেট, ঢাকা, চিটাগাঙ ইত্যা‌দি স্থা‌নে পাচার করা হ‌চ্ছে।

‌খবর প্রকাশ, আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে অবাধে গরু পাচারে লাগাম ধরতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন পাথারকান্দির বিধায়ক কৃ‌ষ্ণেন্দু পা‌ল। তাঁর হস্তক্ষেপে গত মাস-কয়েক ‌চোরাকারবা‌রিরা কিছুটা নীরব ছিল। কিন্তু তা ছিল নেহাৎ সাময়িক। নীরবত কাটিয়ে সম্প্রতি এই সব গরু পাচারচক্র ফের মাথাচাড়া দি‌য়ে উঠে‌ছে।

গবাদি পশু পাচারকাণ্ডের সঙ্গে ব‌হিঃরা‌জ্যের এক বড়সড় চক্র জ‌ড়িত থাকার পাশাপাশি স্থা‌নীয় কতিপয় ব্যক্তি তাদের সহায়তা করছে বলে খবর। জানা গেছে, স্থানীয় টিলাবাজার, ডেঙ্গারবন্দ, কাঁঠালত‌লি, কদমতলা প্রভৃতি জায়গার জনাকয়েক গরু পাইকার (দালাল) এ সব পাচারচ‌ক্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এরা এলাকাদর বি‌ভিন্ন গৃহস্থের গোয়ালঘর থেকে অবাধে গবা‌দি পশু চু‌রি করে পাচারচক্রের হাতে তুলে দেয়। গোয়ালঘরে চোরের দাপাদাপির ফলে রা‌তের ঘুম উবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে স্থা‌নীয় গ‌রিব গৃহস্থদের।

এদিকে আদাল‌তের নি‌র্দে‌শে সীমান্ত এলাকার দশ কি‌লো‌মিটা‌রের ম‌ধ্যে গবা‌দি পশুর হাট-বাজার নিষিদ্ধ। এতে ক‌রিমগঞ্জ জেলার চার‌টি পশুর বাজার আপাতদৃষ্টিতে বন্ধ হয়ে গেছে বলে মনে হবে। কিন্তু আসলে তা নয়। অত্যন্ত গোপনে সমানে চলছে গরুর বাজার। সংশ্লিষ্ট এলাকার স‌চেতন মহ‌লের বক্তব্য, সীমান্ত এলাকা দি‌য়ে বাংলা‌দে‌শে গরু পাচার কর‌তে হ‌লে পাচারকা‌রিীদের বেশ কয়েকটি বিএসএফ চৌ‌কি এবং পু‌লিশ থানা অতিক্রম কর‌তে হয়।‌ অথচ কোন জাদুব‌লে পাচারকা‌রীরা এতসব চেক‌-পয়েন্ট অতিক্রম করে সীমান্ত পা‌ড়ি দি‌চ্ছে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

কোন মন্তব্য নেই: