বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বিতর্কে ক্ষোভ বাড়ছে উত্তরে - Aaj Bikel
বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বিতর্কে ক্ষোভ বাড়ছে উত্তরে

বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বিতর্কে ক্ষোভ বাড়ছে উত্তরে

Share This

পল মৈত্র, বালুরঘাট: মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে দক্ষিণ দিনাজপুরে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির তোরজোড় শুরু করল জেলা প্রশাসন৷ গঙ্গারামপুরের সিড ফার্ম(কৃষি দফতর) এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১৫একর জমি চিহ্নিত করল জেলা প্রশাসন৷ ওই জমি পরিদর্শনে করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক(ভূমি) কৌশিক নাগ, বিপ্লব মিত্র সহ অন্যান্য আধিকারিক ও বিশিষ্টরা৷

জানা গিয়েছে, জেলার মাঝখানে হওয়ায় এই জায়গাটিকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ বালুরঘাট, বুনিয়ায়দপুর, মালদা সহ উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে কাছে হওয়ায় এই জায়গাটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ চিহ্নিত জমিতে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হবে রাজ্যে বলে সূত্রের খবর৷ জেলার সদর শহরকে অবহেলিত করে গঙ্গারামপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি চিহ্নিত করায় প্রশ্ন তুলেছেন বালুরঘাটবাসী থেকে বিদ্বজন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গঙ্গারামপুরের থেকেও বালুরঘাট সবদিক থেকে উপযুক্ত বলে দাবি উঠেছে৷ এমনকি বালুরঘাটবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হতেও শুরু করেছে৷

গত ২১ ফেব্রুয়ারি জেলা সফরে গঙ্গারামপুর স্টেডিয়াম থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই রাজ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জেলাশাসকের কাছে নির্দেশ এসে পৌঁছায়। বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য ১৫একর জমি লাগবে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় হবে তা নিয়ে শুরু হয় জোর তোরজোড়।

অবশেষে এদিন বিকেলে গঙ্গারামপুরের সিড ফার্ম(কৃষি দপ্তর) এলাকায় ১৫একর জমি থাকায় জমি পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ওই জমি আপাতত চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিন জমি পরিদর্শনে যান অতিরিক্ত জেলাশাসক(ভূমি) কৌশিক নাগের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্লব মিত্র, গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র সহ অন্যান্য বিশিষ্টজন। প্রাথমিকভাবে গঙ্গারামপুরের এই জায়গাটি পছন্দ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই জমির প্রস্তাব পাঠানো হবে রাজ্যে। গঙ্গারামপুরের পাশাপাশি জেলার আরও কয়েকটি জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি দেখা হবে। তবে গঙ্গারামপুরের চিহ্নিত করা জমি সবদিক থেকে উপযুক্ত। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ জেলা সদর শহর বালুরঘাটকে ব্রাত্য করে গঙ্গারামপুরে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কথা জানতে পেরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বালুরঘাটবাসীর মধ্যে। ফের একবার বালুরঘাটে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির আবেদন নিয়ে পথে নামতে চলেছেন শহরবাসী।

এবিষয়ে প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্লব মিত্র জানান, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর রাজ্য উচ্চশিক্ষা দপ্তর থেকে জেলাশাসকের কাছে নির্দেশ আসে। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এদিন গঙ্গারামপুর সিড ফার্মে জমি চিহ্নিত করা হয়। এখানে একবারে ১৫একর জমি রয়েছে। জাতীয় সড়কের পাশে হওয়ায় সবদিক থেকে সুবিধে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত জমি পরিদর্শন করা হয় এদিন। যেখানে হাজির ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক ও তার টিম। এই জমির প্রস্তাব রাজ্যে পাঠানো হবে। এছাড়াও জেলায় আরও কয়েকটি জায়গায় জমি দেখা হবে বলে বিপ্লববাবু জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আন্দোলনকারী কৃষ্ণপদ মণ্ডল জানান, শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ জেলার মধ্যে বালুরঘাটে রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য জেলার সদর শহরগুলিতেই গড়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়। তাই এক্ষেত্রেও সদর শহর বালুরঘাটে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির আবেদন জানিয়েছেন তিনি। বালুরঘাট শহরের দু’পাশেই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির উপযুক্ত পরিকাঠামো। বালুরঘাটে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য তারা ফের আন্দোলনে নামবেন বলে কৃষ্ণপদবাবু জানিয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই: