স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা: সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় বাংলার পড়ুয়াদের কথা ভেবে রেজাল্টেও বড়সড় পরিবর্তন আনতে চলেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ৷ সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতার বাজারে বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের তুলে ধরার লক্ষ্যে এবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্টে চালু হচ্ছে পার্সেন্টাইল স্কোর পদ্ধতি৷ চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে নয়া এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ৷
মূলত, টেস্ট বা ক্যাট অথবা ভারতের মর্যাদাপূর্ণ ম্যানেজমেন্ট সংস্থায় ঢোকার জন্যে প্রবেশিকা দিতে হয়৷বছর বছর বহু পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় বসবেন৷ কিন্তু, এই পরীক্ষায় বসতে গিয়ে শুরুতেই পিছিয়ে পড়তে হয় বাংলার পড়ুয়াদের৷ পার্সেন্টাইল স্কোর নিয়ে বিভ্রান্তি থাকায় সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যোগ্যতা বিচারে পিছিয়ে পড়েন পড়ুরা৷ কারণ, এতদিন উচ্চ মাধ্যমিকে ছ’টি বিষয়ের ফলাফল দেওয়া থাকে৷ ফলে, ছ’টি বিষয়ের মধ্যে পাঁচটি বিষয়ে শতাংশে হার নির্ধারণ করা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়৷
ফলে, এই বিভ্রান্তি দূর করতে এবার থেকে পার্সেন্টাইল স্কোর চালুর সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে৷ কী এই পার্সেন্টাইল স্কোর ব্যবস্থা?
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী যে-পাঁচটি বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পাবেন, সেগুলি যোগ করে মোট নম্বর হিসেব করা হবে৷ মোট নম্বরের নিরিখে তিনি কত শতাংশ পরীক্ষার্থীর থেকে এগিয়ে আছেন, জানানো হবে তাও। এটাই পার্সেন্টাইল। কারণ, আইআইটি জয়েন্ট, মেডিক্যালের সর্বভারতীয় প্রবেশিকা-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের পার্সেন্টাইল বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়৷ ফলে, সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় বাংলার পড়ুয়ারা যাতে পিছিয়ে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রেখে এবার মার্কশিটে নয়া পদ্ধতি চালু করা হবে বলে জানানো হয়েছে৷
যদিও, এই ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে ২০১৩ সাল থেকে আলোচনা শুরু হয়৷ কিন্তু, আলোচনা হলেও নয়া এই নম্বর চালুর বিষয়টি চলে যায় হিনঘরে৷ সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বারংবার বাংলার পরাজয়ের কারণ প্রকাশ্যে আসার পর অবশেষে এই পদ্ধতি চালু করতে চলেছে শিক্ষা দফতর৷ আগামী ২৭ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা৷ চলবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত৷
তবে, নয়া পদ্ধতি চালু করা হলেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নকল রুখতে বেশ কিছু কড়া্ পদক্ষেপ নিয়েছে সংসদ৷ নকল করতে গিয়ে ধরা পড়লে পড়ুয়ার খাতা বাতিলের পাশাপাশি, রেজাল্ট আটকে দেওয়া হতে পারে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এই মর্মে অভিযুক্ত পড়ুয়ার রোল নম্বর সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর৷
স্কুল কর্তৃপক্ষের পাঠানো রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্ত পড়ুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। নয়া এই নিয়ম কার্যকর হলে পরীক্ষায় নকলের রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, নকল করার অপরাধে পড়ুয়ার ফলাফল স্থগিত রাখার হলে, বছর নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, সংসদের জারি করা পাঁচ দফা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া পড়ুয়ার রেজাল্টে 'আর এ' লেখা হবে। রেজাল্টে গ্রেড চালু হওয়ার পর এবার প্রথম 'আর এ' ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিতে এই মর্মে পাঁচ দফা নির্দেশ পাঠিয়েছে উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন