কলকাতা : হরিদেবপুরের একটি ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ উদ্ধার করল এক বৃদ্ধের পচা গলা দেহ । উদ্ধারের সময় দেহ আগলে বসেছিলেন বৃদ্ধের স্ত্রী ।
শনিবার সন্ধ্যায় ঘর থেকে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করলে, দরজা ভেঙে দেখা যায় মৃত স্বামীর দেহ আগলে বসে রয়েছেন হাসিরানি দেবী । রবিবার ভোররাতে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে । প্রাথমিকভাবে অনুমান, তিন-চার দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধর । ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায় ।
দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুরের ওস্তাদ আমির খান সরণির শিখাকুঠি আবাসনে থাকতেন ৮২ বছরের অমরকুমার স্যানাল ও তাঁর স্ত্রী হাসিরানি দেবী । প্রায় পাঁচ বছরে ওই আবাসনে রয়েছেন সান্যাল দম্পতি । বন্দরে চাকরি করতেন অমরকুমার স্যানাল । পাড়ায় ধার্মিক, ভালোমানুষ হিসেবেই তাঁর পরিচিত ছিল । তবে পাড়ায় খুব বেশিও মেলামেশা ছিল না । নিঃসন্তান ছিলেন স্যানাল দম্পতি । হরিদেবপুরের ওই ফ্ল্যাটে তাঁরা দু’জনেই থাকতেন ।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, গত চার-পাঁচদিন ধরেই পাড়ায় অমরবাবুকে দেখা যায়নি । পাঁচদিন আগে শেষবার বৃদ্ধকে দেখা যায় । তাদের ধারণা, দিন কয়েক আগেই মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধর । ফ্ল্যাটের সামনে খবরের কাগজ জমছিল । এরপর সন্ধ্যায় বাড়ির ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে । যারপরই স্যানাল দম্পতির বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন প্রতিবেশীরা । কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি । সাড়া না মেলায় হরিদেবপুর থানায় খবর দেন প্রতিবেশীরা । পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখে মৃত স্বামীর পচাগলা দেহ আঁকড়ে বসে আছেন হাসিরানী দেবী । রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে । পুলিশকে দেখে খানিকটা বিরক্তিও প্রকাশ করেন হাসিরানী দেবী । পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সামনেই বারবার মত স্বামীকে ডাকছিলেন তিনি । এমনকী বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধা বলেন, তাঁর স্বামী বেঁচে আছেন । কোনওক্রমে তাঁর থেকে দেহ ছাড়িয়ে পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয় । প্রাথমিকভাবে অনুমান, চার-পাঁচদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহ কালো হয়ে গিয়েছিল । প্রতিবেশীদের দাবি, হাসিরানি দেবীর মানসিক সমস্যা রয়েছে । তাঁকে খুব বেশি বাড়ির বাইরে দেখা যেত না । পুলিশ সূত্রে খবর, হাসিরানিদেবীকে তাঁর স্বামীর মৃত্যুর বিষয়ে বহুবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি । প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন