শিলিগুড়ি : নিখোঁজ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধূপগুড়ি থেকে শিশু উদ্ধার করল শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে সবিতা গড়াই নামে অভিযুক্ত যবুতিকে। পিসির কোল থেকে শিশুকে নিয়ে চলে গিয়েছিল ওই যুবতি। পরে সিসিটিভি ফুটেজকে হাতিয়ার করে তদন্তে নামে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। খোঁজ পাওয়া যায় শিশুর। ধূপগুড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে ওই শিশুকে চুরির কথা অস্বীকার করেছে ধৃত যুবতি।
পুলিশকে অভুযুক্ত যুবতি বলে, “চুরি করিনি। ওইদিন হাসপাতালে তার মা’কে খুঁজে না পেয়ে বাড়়ি নিয়ে যাই।” নিজের চিকিৎসার জন্য সেদিন সে শিলিগুড়ি হাসপাতালে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে। কিন্তু, নিজেই কী কারণে শিশুকে কোলে তুলে নিয়েছিল তা খোলসা করেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, যে যুবতি শিশুকে নিয়ে গিয়েছে সে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন ঢাকেশ্বরী কালীবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকত। সেখানে সে একাই থাকে। নিঃসন্তান ওই বিবাহিত যুবতি পরিচারিকার কাজ করে। তার আসল বাড়ি ধুপগুড়িতে।
মঙ্গলবার আচমকা তার ভাড়াবাড়িতে বাচ্চার কান্না শোনা যায়। এরপর জানাজানি হলে পুলিশে খবর যায়। ততক্ষণে অবশ্য গা ঢাকা দেয় সে। জানা যায়, ওই যুবতি ঢাকেশ্বরী কালীবাড়ি এলাকা ছেড়ে জলপাইগুড়ির দিকে রওনা দিয়েছে। রাতের অন্ধকারেই তড়িঘড়ি পুলিশের একটি দল জলপাইগুড়ি থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে রওনা দেয় জলপাইগুড়ির দিকে।
এদিকে, সন্তানের খোঁজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন মা সোমা সরকার। বাড়ির লোকের নজর এড়িয়ে চলে যান শিলিগুড়ি থানায়। সেখানে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর থানা ছেড়ে চলে যান। এরপর দীর্ঘক্ষণ তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন আবার শিশুকে ছেড়ে মায়ের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। ঘণ্টাখানেক পর বাবুপাড়া এলাকায় রাস্তার ধারে বসে থাকতে দেখা যায় ওই মহিলাকে। তারপর সেখান থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তারপর ফের চুরি যাওয়া শিশু সহ ওই মহিলার খোঁজে রওনা দেয় পুলিশ। শিলিগুড়ি শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের ঝংকার মোড় এলাকার বাসিন্দা সোমা সরকার (২২)। দিন কয়েক আগে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। সিজ়ারের সেলাই পেকে যাওয়ায় মঙ্গলবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যান। সঙ্গে ছিল ননদ সরস্বতী সরকার (১৫)। তার কাছে শিশুকে রেখে আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন সোমাদেবী।
পরে ননদ জানায়, অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলা তার কোল থেকে নিয়ে গেছে শিশুটিকে। সন্তানের খোঁজ না পেয়ে বাড়ির লোক খবর দেয় শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশের শিলিগুড়ি থানাায়। প্রথমদিকে কোনও খোঁজ না পেয়ে শিশু পাচারকাণ্ডে যুক্ত থাকা মহিলাদের তালিকা তৈরি করে পুলিশ। সোশাল মিডিয়ায় দেওয়া হয় হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ। সেইসঙ্গে শহর শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকাজুড়ে কাজে লাগানো হয় পুলিশের সোর্স। সেই সূত্র ধরেই হায়দরপাড়া এলাকায় গিয়েছিল পুলিশ। তবে সেই সূত্র ভিত্তিহীন ছিল। এরপর ফের নতুন করে তদন্তে নামে পুলিশ। জানা যায়, চুরি করা শিশুকে নিয়ে ঢাকেশ্বরী কালীবাড়ি এলাকায় ছিল ওই যুবতি। পরে তাকে নিয়ে রওনা দেয় জলাপাইগুড়ির দিকে। শেষে ধূপগুড়ি থেকে শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন