আজ বিকেল: ঠিকভাবে হাঁটতেও পারেন না৷ ভাঙা চোয়ালে মাঝেমধ্যেই এড়িয়ে যায় শব্দ৷ মোটা কাঁচের চশমা ছাড়া দেখতেও পান না ঠিকঠাক৷ চোখে-মুখে বয়সের ভার স্পষ্ট৷ নয় নয় করে জীবনের ৯৮টি বছরও কাটিয়ে দিয়েছেন৷ কিন্তু, শেষ জীবনে দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে পুঁজি করে এভাবেও ফিরে আসা যায় তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন বছর ৯৮র ‘তরুণ’৷ জানার আগ্রহে শেষ বয়সেও ‘উচ্চ শিক্ষা’র স্বপ্নের দৌড়ে সফল হলেন বিহারের রাজ কুমার ভাইস৷
৯৮ বছর বসয়ে বিহারের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রি ছিনিয়ে এনে নজির গড়লেন রাজ কুমার ভাইস৷ তবে, শেষ জীবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিয়ায় পা রাখতে গিয়ে কম গঞ্জনার মুখে পড়ে হয়নি তাঁকে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি থেকে শুরু ক্লাস ও পরীক্ষায় বসা পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপে বাধা মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকে৷ সহপাঠীদের কাছে গঞ্জনা-ব্যঙ্গ কম সইতে হয়নি তাঁকে৷ তবে, সব বাধা কাটিয়ে ১৬টি পেপারে মোট ৫১ শতাংশ নম্বর পেয়ে অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রির গণ্ডী পার করলেন বছর ৯৮র ‘তরুণ’ রাজ কুমার৷
বয়সকে হার মানিয়ে ৯৮র ‘তরুণে’র এহেন সাফল্য দেখে স্তম্ভিত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ রাজকুমারের সাফল্যকে তুলে ধরতে আয়োজনেরও খামতি রাখেনি কর্তৃপক্ষ৷ বুধবার এই সাফল্যের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়ে একটি বিদায় সংবর্ধনাও আয়োজন করা হয়৷ বিহারের রাজ্যপাল সত্যপল মালিক বছর ৯৮র রাজ কুমার ভাইসের হাতে সার্টিফিকেট ও স্মারক তুলে দেন৷
কিন্তু, শেষ বয়সে দাঁড়িয়ে হঠাৎ কেন অর্থনীতিতে এমএ করতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন তিনি? বছর ৯৮র ‘তরুণে’র সাফ জবাব, ‘‘শিক্ষার কোনও বয়স হয় না৷ সে গ্রহণে হোক, কিম্বা দানে৷ করণ, শিক্ষা মানুষকে সঠিক পথের দিশা দেখায়৷ এখানে বয়স বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না৷’’
বিষয় হিসাবে অর্থনীতিকে বেছে নেওয়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘দিনে দিনে দেশে দারিদ্রতা তীব্র আকার নিতে শুরু করেছে৷ মূলত, দেশের অর্থনীতিতে গরিবরা কেন পিছনে পড়ছে, তার কারণগুলি বুঝতেই আমি এই বিষয়টি বেছে নিয়েছি৷ তবে, ৯৮ বছর বয়সে মাস্টার্স ডিগ্রি করে আমি কোনও ভাবেই চমক দিতে চাইনি৷ চেয়েছি জানতে৷ অর্থনীতি বুঝতে৷’’ তবে, এখানেই থেমে থাকেননি তিনি৷ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন৷
বলেন, ‘‘দেশে গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থার হাল খুবই খারাপ৷ গ্রামে শিক্ষার আলো পৌঁছাতে পারছে না বলেই দারিদ্রতা বাড়ছে৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে আমার একান্ত আবেদন, বিষয়টি একটু দেখুন৷ তা না হলে পিছিয়ে পড়বে গ্রাম৷ বাধাপ্রাপ্ত হবে দেশের বিকাশ৷’’
আরও পড়ুন- শিক্ষক নিয়োগে পর্ষদ সভাপতি’র মন্তব্যে আরও বাড়ল
বিতর্ক,
তাহলে সত্যিই কি দুর্নীতি হয়েছে?
আরও পড়ুন- রাজ্যে কাজের কোনও অভাব নেই: মমতা
আরও পড়ুন- শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির পাহাড় ভাঙতে যে পথে এগচ্ছেন রাজ্যের কয়েক হাজার
যুবক
আরও পড়ুন- প্রাথমিকের সিলেবাসে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনছে সিলেবাস কমিটি!
আরও পড়ুন- প্রাথমিকের সিলেবাসে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনছে সিলেবাস কমিটি!
আরও পড়ুন- কমিশনের ‘ঘুম ভাঙাতে’ SSC পরীক্ষার্থীদের নয়া কৌশল! মাত্র দেড় টাকায় তোলপাড় হতে চলেছে রাজ্য
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন