তফসিলিদের উপর অত্যাচার রুখতে অক্ষম মমতার সরকার, ক্ষোভ কমিশনের - Aaj Bikel
তফসিলিদের উপর অত্যাচার রুখতে অক্ষম মমতার সরকার, ক্ষোভ কমিশনের

তফসিলিদের উপর অত্যাচার রুখতে অক্ষম মমতার সরকার, ক্ষোভ কমিশনের

Share This
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের দলিত তথা তফসিলি জাতির মানুষদের উপর ধর্ষণ, খুন, বাড়ি পোড়ানোসহ হাজারো অত্যাচার রুখতে অক্ষম পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পিছিয়ে পড়া এই মানুষজনের সার্বিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার আদৌ তৎপর নয়৷

দু’দিনের কলকাতা সফরে গিয়ে এই উপলব্ধির কথাই শোনালেন জাতীয় তফসিলি কমিশনের চেয়ারম্যান রামশংকর কাঠেরিয়া। তাঁর দাবি, তফসিলি জাতি-উপজাতি নিগ্রহ আইন পশ্চিমবঙ্গে সঠিকভাবে প্রয়োগ হয় না। শুধু তাই নয়, আইনে নিগৃহীতদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার যে সংস্থান রয়েছে, তাও এ রাজ্যে সঠিকভাবে কার্যকর হয় না। সমাজে পিছিয়ে থাকা এই অংশের মানুষের করুণ হাল দেখে রীতিমতো বিরক্ত কমিশনের চেয়ারম্যান৷

সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁর খোলামেলা আলাপচারিতায় সেই অসন্তোষই ফুটে উঠল। রামশংকর কাঠেরিয়া জানান, ১৫ দিনের মধ্যে এ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট কমিশনে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা হাতে পেলে একমাসের মধ্যে কমিশন রাষ্ট্রপতির কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করবে। পাশাপাশি রাজ্যের তফসিলিদের এই বেহাল চিত্র বদলাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য চিঠি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন কমিশনের প্রধান৷ এদিন কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা তফসিলি জাতির মানুষদের অসহায় কাহিনির কথা শোনে কমিশনের ফুল বেঞ্চ৷

যেখানে চেয়ারম্যান ছাড়াও হাজির ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান এল মুরুগান এবং তিন সদস্য যোগেন্দ্র পাসোয়ান, কে রামালু, স্বরাজ বিদয়ান। কমিশনের ফুল বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ—নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং বর্ধমানে তফসিলি জাতির মানুষদের উপর অত্যাচারের হার সবচেয়ে বেশি। তারই রেশ ধরে কমিশনের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত, পরবর্তী সফরে ফুল বেঞ্চ কিংবা কোনও সদস্য কলকাতায় আসবেন না। যে যে জায়গায় দলিত নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে, সেই জেলায় যাবেন তাঁরা। তবে গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আরও কয়েকটি রাজ্যেও তফসিলিদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কমিশনের চেয়ারম্যান৷

তাঁর দাবি, কেরল, হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে তফসিলি নিগ্রহের ঘটনা আকছাড় ঘটছে। বিরোধীদের বক্তব্য, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশজুড়ে দলিত নিগ্রহের ঘটনা বেড়ে চলেছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কমিশনের প্রধানের সংক্ষিপ্ত জবাব, বিষয়টি একেবারেই ঠিক নয়। এদিন সকালে কমিশনের ফুল বেঞ্চ রাজ্যের মুখ্য সচিবসহ প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠক করে। পরে এনিয়ে জানতে চাওয়া হলে রামশংকর কাঠেরিয়া বলেন, রাজ্যের আমলারাও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তফসিলি জাতিভুক্তদের সার্বিক উন্নয়নে একাধিক ফাঁক রয়েছে। তা সে কেন্দ্রীয় প্রকল্পই হোক বা রাজ্যের প্রকল্প। তা কাটিয়ে উঠতে প্রশাসনিক কর্তাদের একাধিক পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় কমিশনের প্রতিনিধিরা৷

কোন মন্তব্য নেই: