আজ বিকেল: যশোহর রোড সম্প্রসারণের জন্য জাতীয় সড়কের দু’পাশের ৪ হাজার ৩৬টি গাছ কাটার পরিকল্পনা করেছে সরকার৷ কিন্তু, নির্বিচারে এই গাছগুলি কাটা হলে পরিবেশের উপর কী প্রভাব পড়তে পারে তা এখনও জানতে পারল রাজ্য৷ প্রায় দু’মাস বেশি কেটে গেলেও আদালতে পরিবেশগত সমীক্ষার কোনও রিপোর্ট জামা দিতেই পারলেন না সরকারপক্ষের আইনজীবী৷ গাছ কাটার অনুমতি নেওয়ার আগে পরিবেশগত সমীক্ষা হয়েছিল কি না, তার রিপোর্ট গত ৭ এপ্রিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সরকারপক্ষকে আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছিল৷ কিন্তু, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত জমা করতে পারেনি রাজ্য৷ সমীক্ষার কাগজপত্রের প্রতিলিপি অবিলম্বে মামলাকারীদের হাতে দেওয়ার জন্য দ্বিতীয়বারের জন্য নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷
কেননা, যশোহর রোডে বিপুল পরিমাণ গাছ কাটা হলে পরিবেশের উপর তার ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পরিবেশ কর্মীরা৷ এমনকি, কৃষি নির্ভর অঞ্চলে গাছ কাটার ফলে বৃষ্টিপাত কম হওয়ারও আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে৷ ইতিমধ্যেই গাছ কাটার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতনতা করতে লাগাতার প্রচার অভিযান শুরু করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য ও ‘গাছ বাঁচাও’ কমিটির সমদস্যরা৷
যশোহর রোড সম্প্রসারণে জন্য নির্বিচারে গাছ কাটা রুখতে কলকাতা হাইকোর্টের জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে এপিডিয়ার৷ পরে পরিবেশ কর্মীদের পক্ষ থেকে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়৷ জোড়া মামলার গত শুনানিতে এপিডিআরের আইনজীবী রঘুনাথ চক্রবর্তী, মেহবুব আহমেদ ও মামলাকারী দুই ছাত্রছাত্রীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, শামিম আহমেদ অংশ নেন৷ সরকারি তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত, অন্যতম কৌঁসুলি জয়তোষ মজুমদার, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ছাড়াও কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের আইনজীবীও হাজির হন৷
এদিন মামলার শুনানিতে যশোহর রোডে গাছ কাটার বন দফতরের যে অনুমতিপত্র হলফনামায় পেশ করেছে সরকারপক্ষ, তার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা৷ গত বছর ২২ জুলাই বারাসতের ডিএফও-র কাছে গাছ কাটার অনুমতি চান জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ৷ ওই দিনই অনুমতি দেওয়া হয়৷ দিনের দিনে তা কী করে সম্ভব -সেই প্রশ্ন ওঠে৷ সেই অনুমতিও ছ’মাসের, যার মেয়াদ অনেক আগেই ফুরিয়েছে বলে আদালতে জানানো হয়৷ কর্মবিরতি থাকা সত্ত্বেও জনস্বার্থে মামলা শুনানি শেষে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ যশোহর রোডে গাছ কাটার উপর স্থগিতাদেশ বহাল রাখে৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন