কলকাতা : বিধাননগরের মেয়র তথা বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে এক কোটি টাকা তোলাবাজির অভিযোগ আনলেন সল্টলেকেরই এক প্রমোটার মধুসূদন চক্রবর্তী । তাঁর অভিযোগ, ব্যক্তিগত কারনে নয়, ত্রিপুরা বিধানসভার আসন্ন নির্বাচনের জন্য এক কোটি টাকা চান সব্যসাচী দত্ত । তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে 'দেখে নেব'বলে হুমকি দেন বিধাননগরের মেয়র ।
এব্যাপারে সব্যসাচী দত্ত ‘হিন্দুস্থান সমাচার’কে বলেন, এটা বিজেপির চক্রান্ত । উনি পুলিশে যান । যেখানে খুশি যান । যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন । প্রত্যুত্তরে মধুসূদন চক্রবর্তী বলেন, আমি বিজেপির সদস্য নই । বিজেপিরই যদি চক্রান্ত হবে তা হলে উনি বারবার এক কোটি টাকা চেয়ে ফোন করছেন কেন ? আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানাব ।
মধুসূদন চক্রবর্তীর অভিযোগ, কুড়ি দিন আগে এক রবিবারে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত ফোন করে বলেন, ত্রিপুরায় তৃণমূলের নির্বাচনের জন্য ফেস্টুন পোষ্টার বাবদ ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা তাকে দিতে হবে । ২ তারিখে ফেস্টুন, পোষ্টার তৈরি করেন এমন এক ভদ্রলোক এসে আমার অফিস থেকে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যান । এর প্রমাণ হিসেবে মধুসূদনবাবু তাঁর অফিসের সিসি টিভি ফুটেজ দেখান । তিনি বলেন, ৩ তারিখে ফোন করে সব্যসাচী দত্ত বলেন, ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পেয়েছি । কিন্তু, এবার ত্রিপুরার নির্বাচনের জন্য ৩০ লক্ষ টাকা দিতে হবে । তখন আমি বলি, আমার বাবা অসুস্থ । হাসপাতালে ভর্তি ।
আমাকে ১২ তারিখ পর্যন্ত সময় দিন । এরমধ্যে ২ তারিখে আবার ফোন করে বলেন, ৩০ নয়, ৫০ লক্ষ টাকা দিতে হবে । আমি ভয় পেয়ে যাই । কেননা, এত টাকা কোথায় পাব । সব্যসাচী দত্ত হুমকি দিয়ে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধায়ের কাছে গেলেও তিনি বাঁচাতে পারবেন না । মুখ্যমন্ত্রী কিছুই করতে পারবেন না । মুখ্যমন্ত্রীও বিষয়টি জানেন । আমি তখন ভেবেছিলাম বউ মেয়ের সোনার গহণা বেচেও যেখান থেকে হোক টাকাটা দেব । ৭ তারিখ, ৮ তারিখ, ৯ তারিখ এককোটি টাকা চেয়ে ফোন করেন । কাল রাত পৌনে এগরাটা নাগাদ আবার ওনার ফোন আসে, আমি সব্যসাচী দত্ত বলছি । এক কোটি টাকা কোথায় গেল । আমি ভয়ে বলি, দেখছি । আজ বেলা বারোটায় ফোন করলে সাহস করে বলি, এক কোটি টাকা চাঁদা দিতে পারব না । তবে আমি আপনার পায়ের তলায় থাকতে চাই । তখন মেয়র আমাকে দেখে নেব বলে হুমকি দেন ।
তিনি বলেন, আমি আজ বেলা একটা নাগাদ ই মেইল করে বিধাননগর উত্তর থানার আই সি, বিধাননগরের কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি । নবান্নতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ই মেইল পাঠিয়েছি । হার্ড কপি স্পিড পোষ্ট করেছি ।
তিনি জানান, অবিশ্বাসের কিছু নেই । সব্যসাচীবাবুর সমস্ত ফোন রেকডিং তাঁর কাছে আছে । তিনি বলেন, কোনও প্রতারণার সঙ্গেই তিনি যুক্ত নন । তৃণমূলের কিছু হাই প্রফাইল লোক ষড়যন্ত্র করছে। এখন সবই আদালতের আওতাধীন ।
উল্লেখ্য, এই মধুসূদন চক্রবর্তীকে ২০১৬ সালে ৯৯ লক্ষ টাকা প্রতারণার দায়ে গ্রেফতার হয়ে ছিল । তাছাড়া তার বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন