গুয়াহাটি : আসাম পাবলিক সার্ভিস কমিশন (এপিএসসি)-এর নতুন চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব নিলেন রাজ্যের প্রাক্তন দুঁদে আমলা ধ্রুবজ্যোতি হাজরিকা। আজ বুধবার বেলা আড়াইটে নাগাদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার রঞ্জিত বরঠাকুরের কাছ থেকে দায়িত্ব সমঝে নিয়েছেন নবাগত অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক হাজরিকা।
গত ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর এপিএসসি-র তদানীন্তন চেয়ারম্যান রাকেশ পালকে গ্রেফতারের পর এই পদ শূন্য ছিল। তবে ওই বছরের ১ ডিসেম্বর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছিল অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার রঞ্জিত বরঠাকুরকে।
এদিকে দায়িত্ব নেওয়ার পর হিন্দুস্থান সমাচার-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নবাগত চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি হাজরিকা জানান, এপিএসসিতে সংস্কার আনাই তাঁর কাছে সব থেকে বড় চেলেঞ্জ। একে কলঙ্কমোচন করে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে নিষ্ঠা সহকারে তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবেন।
তিনি জানেন, এপিএসসিতে কর্মরত সকল পদাধিকারী যথেষ্ট সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন। এই টিমকে নিয়েই কমিশনকে সংস্কারিত করার অদম্য ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন তিনি। নবাগত চেয়ারম্যান ধ্রুবজ্যোতি হাজরিকা বলেন, এই পদ গ্রহণ করতে তাঁকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। অনেক ভেবে-চিন্তে প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন। বলেন, তাঁর একটি নিজস্ব জীবন রয়েছে। লেখালেখি করে বেশিরভাগ সময় কাটান। তাই রাজ্যের বন ও পরিবেশ দফতরের কমিশনার-সচিব পদে থাকাকালীন গত ২০১৬ সালের ১০ জুন স্বেচ্ছাবসর নিয়েছিলেন নেশার লেখালেখি এবং অন্যান্য সামাজিক কাজে সময় দেওয়ার জন্য। এবার এই গুরু দায়িত্ব মাথায় এলেও এরই ফাঁকে লেখালেখি চালিয়ে যাবেন তা যত রাতই হোক না কেন। তবে যে দায়িত্ব তিনি মাথায় নিয়েছেন তা পালনে এতটুকুও কার্পণ্য করবেন না, দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন হাজরিকা।
প্রসঙ্গত, ধ্রুবজ্যোতি হাজরিকা তাঁর কর্মজীবনে যখন, যে পদের দায়িত্ব পেয়েছেন, সেই সব দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতা এবং সুনামের সঙ্গে পালন করেছেন। তিনি একজন ভালো টেনিস খেলোয়াড়ও। সেই সুবাদে বহুজনের সঙ্গে তাঁর নিবিড় ঘনিষ্ঠতার পরিসর নেহাত কম নয়।
উল্লেখ্য এপিএসসিতে চাকরি-বাণিজ্য চালু করার অভিযোগে গত ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয় তদানীন্তন চেয়ারম্যান রাকেশ পালকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, অসমের বিভিন্ন প্রান্তে এজেন্টের মাধ্যমে রাজ্যের মেধাবী প্রার্থীদের এপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করার নামে দু-হাতে টাকা লুট করছিলেন। এভাবে এপিএসসিতে সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে অবৈধ টাকার লেনদেনের এক মুক্ত বাজার বসিয়েছিলেন তিনি। প্রত্যেক চাকরি প্রত্যাশীর কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা করে বিভিন্ন দালালের হাত দিয়ে তিনি আদায় করতেন, এমনই অভিযোগ রয়েছে রাকেশের বিরুদ্ধে। সেই থেকে এখনও তিনি গুয়াহাটি সেন্ট্রাল জেলের বাসিন্দা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন